প্রতীকী ছবি।
খুড়তুতো দিদির বিয়ে উপলক্ষে বিহার থেকে সোমবার সকালেই এসেছিল পাঁচ বছরের অমিত দাস। এ দিন দুপুরে খেলতে খেলতে রাস্তার পাশে বাতিস্তম্ভের একাংশ ভেঙে পড়ে তার উপরে। অমিতকে একবালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, কাকার মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে বিহারের জামুইয়ের বাসিন্দা অমিত এ দিন মা-বাবার সঙ্গে একবালপুরের হোসেন শাহ রোডে এসেছিল। অমিতের কাকার বাড়ি থেকে কিছুটা দূরের বাসিন্দা মহম্মদ সাদ্দাম বলেন, ‘‘ছেলেটি রাস্তার পাশে খেলছিল। দুপুর বারোটা নাগাদ ভারী কিছু পড়ার শব্দ শুনে ছুটে এসে দেখি, বাতিস্তম্ভের অর্ধেক ওই ছেলেটির শরীরের উপরে ভেঙে পড়ে রয়েছে।’’ সাদ্দামই আহত শিশুটিকে গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে গিয়ে একবালপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। বিকেলের দিকে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। এ দিন রাতেই অমিতের খুড়তুতো দিদির বিয়ে। সোমবার রাত পর্যন্ত পাড়ার লোকেরা অমিতের মৃত্যু সংবাদ তার পরিবারকে জানাননি।
সাদ্দাম সোমবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘‘কাকার মেয়ের বিয়েটা সুষ্ঠু ভাবে হোক। তার পরে আমরা জানাব।’’ বাতিস্তম্ভ ভেঙে পড়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা কলকাতা পুরসভার উপরে ক্ষুব্ধ। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘এলাকার বেশির ভাগ বাতিস্তম্ভের ভিতরে জরাজীর্ণ থাকলেও উপরের দিকে রং করে দেওয়া হয়। পুরসভার গাফিলতির জন্যই শিশুটির প্রাণ গেল।’’ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হোসেন শাহ রোডের ওই বাতিস্তম্ভের একাংশ মরচে ধরে জীর্ণ হয়ে পড়ায় এ দিন ভেঙে পড়ে।
জীর্ণ বাতিস্তম্ভ পুরসভা কেন সংস্কার করে না? কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (আলো) মনজর ইকবাল বলেন, ‘‘ঘটনাটি জানা নেই। খোঁজ নিতে হবে।’’ স্থানীয় কাউন্সিলর নিজামুদ্দিন শামস বলেন, ‘‘এটি একটি দুর্ঘটনা। তবে বাতিস্তম্ভগুলির রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি হয়ে পড়েছে।’’ এ দিন রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় একবালপুর থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। ডিসি (বন্দর) ওয়াকার রেজা বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’