বোলপুরের নির্যাতিতার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি। প্রতীকী ছবি।
এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি বোলপুরের নির্যাতিতা এতটাই ট্রমাটাইজড যে নিজের যন্ত্রণার কথাও বলতে পারছেন না। মঙ্গলবার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তির পর কিছু খেতেও চাইছিলেন না তিনি। আপাতত শারীরিক ভাবে স্থিতিশীল হলেও মানসিক ভাবে তিনি ভেঙে পড়েছে বলে জানান এক চিকিৎসক।
এসএসকেএম হাসপাতালের এইচডিইউ-তে ভর্তি রয়েছেন নির্যাতিতা। গতকাল হাসপাতালে আনার পর তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়। তখন চিকিৎসকরা লক্ষ করেন নির্যাতিতার রক্তপাত হচ্ছে। তা বন্ধ করতে অস্ত্রপোচার করা হয়। আপাতত অ্যান্টিবায়েটিক-সহ একাধিক ওষুধ দেওয়া হয়েছে তাঁকে। প্রয়োজনে রক্ত দেওয়া হতে পারে বলে জানান চিকিৎসক।
নির্যাতিতা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ায় কথা বলতে না চাইছে না। তাই গতকাল দু’জন মনোবিদ তাঁকে দেখে যান। বুধবারও সিনিয়র মনোবিদরা দেখতে আসবেন বলে সূত্রের খবর।
এ ছাড়াও তাঁর চিকিৎসায় হাসপাতালের তরফ থেকে মেডিক্যাল টিম গঠনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এক মহিলা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ-সহ দুই স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, মেডিসিনের চিকিৎসক, সাইকিয়াট্রিস্ট, ফরেনসিক মেডিসিনের চিকিৎসক ওই মেডিক্যাল টিমে থাকতে পারেন। আপাতত একাধিক বিভাগের চিকিৎসক নির্যাতিতাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৩১ মার্চ দীপ্তি ঘোষ নামে এক যুবক ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। এমনকি সে কথা কাউকে জানালে তাঁকে খুন করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। এর পর ওই তরুণী তাঁর মাসতুতো বোনের বাড়িতে চলে যান। সেখান থেকে বাড়ি ফিরলেও এ নিয়ে ‘লোক জানাজানি’র ভয়ে থানায় অভিযোগ জানাতে রাজি হননি। এর পর গত ৩ এপ্রিল বর্ধমান থেকে ওই তরুণী ডাক্তার দেখিয়ে ফেরার পর দীপ্তি, তরুণীর বাবা বাবলু সোরেন এবং আরও দু’জন ওই তরুণীকে গণধর্ষণ করেন বলে অভিযোগপত্রে লেখা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে তাঁকে বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। অন্য দিকে, মঙ্গলবারই ধর্ষণে অভিযুক্ত বাবা এবং স্থানীয় তৃণমূল নেতা মিলিয়ে মোট চারজনকে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।