প্রতীকী ছবি।
রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় পড়ে প্রৌঢ়। তাঁর হাতের শিরা কাটা। আর বিছানার পাশে পড়ে রয়েছে স্থানীয় থানার ‘অফিসার ইন-চার্জ’কে লেখা একটি চিঠি। বৃহস্পতিবার সকালে বালিতে এ ভাবেই উদ্ধার হল এক প্রৌঢ়ের মৃতদেহ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রৌঢ়ের নাম রূপক ভট্টাচার্য (৫৭)। অবিবাহিত রূপকবাবু বালির রাধানাথ ব্যানার্জি লেনে তাঁর দাদা-বৌদির সঙ্গে থাকতেন। এক সময়ে গৃহশিক্ষকতা করতেন তিনি। তাঁর পরিজনেরা পুলিশকে জানিয়েছেন, বিগত কয়েক বছর ধরে স্নায়ুরোগে ভুগছিলেন রূপকবাবু। দু’বছর আগে তাঁর অস্ত্রোপচার হওয়ার পর থেকে তিনি প্রায় শয্যাশায়ী। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর অসুস্থতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছিল। বর্তমানে সর্বক্ষণ বিছানাতেই থাকতেন রূপকবাবু। হাঁটাচলাও বিশেষ করতে পারতেন না। বেশ কিছু দিন ধরে তিনি মানসিক সমস্যাতেও ভুগছিলেন বলে জানিয়েছেন পরিজনেরা।
এ দিন সকালে প্রৌঢ়ের ঘরের দরজা ভেজানো ছিল। কিন্তু অনেকক্ষণ তাঁর কোনও সাড়া না পেয়ে সন্দেহ হয় পরিজনদের। এর পরে দরজা খুললে তাঁরা দেখতে পান, বিছানায় চাদর অবিন্যস্ত। হাফ হাতা জামা ও হাফ প্যান্ট পরে বিছানায় পাতা অয়েলক্লথের উপরেই পড়ে রয়েছেন রূপকবাবু। শীর্ণকায় ওই প্রৌঢ়ের ডান হাতের কব্জির কাছে রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। রক্ত পড়ে রয়েছে অয়েলক্লথের উপরেও। এই দৃশ্য দেখার পরেই তাঁর বাড়ির লোকেরা তড়িঘড়ি বালি থানায় খবর দেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, খবর পেয়ে ঘরে ঢুকে তদন্তকারীরা দেখেন, বিছানার পাশে পড়ে রয়েছে একটি রক্তমাখা ব্লেড। আর তার পরেই বিছানার এক পাশ থেকে উদ্ধার হয় থানার ওসি-কে লেখা চিঠিটি।
সূত্রের খবর, সাদা কাগজে ইংরেজি-বাংলা মিশিয়ে কয়েকটি লাইন লেখা রয়েছে ওই চিঠিতে। ওই চিঠিতে বালি থানার ওসি-কে লেখা হয়েছে যে, অস্বাভাবিক শারীরিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরেই স্বেচ্ছায় আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছেন রূপকবাবু। তবে এই ঘটনার জন্য কেউ দায়ী নন। চিঠির নীচে ইংরেজিতে সই রয়েছে তাঁর।
তবে থানার ওসি-কে উদ্দেশ্য করে এমন চিঠি কেন লিখেছেন ওই প্রৌঢ়, তা ভেবে অবাক হচ্ছেন তদন্তকারীরাও। যদিও প্রাথমিক ভাবে অনুমান, এই ঘটনার পরে যাতে রূপকবাবুর বয়স্ক দাদা-বৌদি এবং পরিজনদের কেউ সমস্যায় না পড়েন, তা-ই এই সিদ্ধান্ত। যদিও পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।