প্রতীকী ছবি।
করোনা প্রতিষেধকের যে কোনও ডোজ় নেওয়ার ১৪ দিন পর থেকেই রক্তদান করতে পারবেন ইচ্ছুক দাতা। নয়া এই সিদ্ধান্ত নিল স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এই সিদ্ধান্তে রক্তের সঙ্কট হওয়ার যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তা কমবে বলেই চিকিৎসকদের একাংশের মত। সিদ্ধান্তে খুশি রক্তদানের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাও।
১ মে থেকে দেশ জুড়ে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সকলকে করোনা প্রতিষেধক দেওয়ার ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই ছাড়পত্রের সঙ্গেই দীর্ঘ সময়ের জন্য রক্তের সঙ্কট নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল রক্তদানে যুক্ত বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে। কারণ, করোনা প্রতিষেধক নেওয়ার প্রথম ডোজ় থেকে দ্বিতীয় ডোজ় এবং তার পরবর্তী ২৮ দিন পরে ইচ্ছুক দাতা রক্ত দিতে পারবেন বলেই এত দিন জানা ছিল। ফলে ওই প্রতিষেধক নিলে দীর্ঘ দিন এক জন দাতা রক্তদান করতে পারবেন না।
অথচ রক্তদান কর্মসূচিগুলির দিকে নজর রাখলেই দেখা যাবে, উৎসাহী দাতাদের বেশির ভাগ তরুণ-তরুণী। তাই আশঙ্কা ছিল, একসঙ্গে তরুণ প্রজন্মের বড় অংশ প্রতিষেধক নিলে বেশ কিছু দিনের জন্য তাঁরা রক্তদানের আওতার বাইরে চলে যেতেন। ফলে রক্তের সঙ্কট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা ছিল। অতিমারির সময়ে যা নতুন করে বড় সমস্যার সামনে দাঁড় করিয়ে দিত। ফলে সামাজিক মাধ্যমেও প্রতিষেধক নেওয়ার আগেই রক্তদান করার জোর প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছিল। আয়োজন করা হচ্ছিল একাধিক রক্তদান কর্মসূচির।
অবশেষে সিদ্ধান্ত বদল করায় তাই স্বস্তি সব মহলেই। প্রতিষেধকের যে কোনও ডোজ় নেওয়ার ১৪ দিনের মাথায় ইচ্ছুক ব্যক্তি রক্তদানে সক্ষম হলেও দাতার বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। ওজন হতে হবে ৪৫ কেজির ঊর্ধ্বে। শহরে রক্তদানের একাধিক কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত অচিন্ত্য লাহা বলেন, “গরমের সময়ে রক্তের সঙ্কট প্রতি বার তৈরি হয়। তার মধ্যে করোনাকালে রক্তের চাহিদা আরও বেড়েছে। ফলে আগের নিয়মে বড় সমস্যা হত। নতুন সিদ্ধান্তে সেই সঙ্কটের আশঙ্কা অনেকটাই কমবে। অবশ্যই এতে খানিকটা স্বস্তি হবে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এবং অন্যান্য রোগীদের।”
বাঙুর ব্লাড ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক কৃষ্ণকান্ত বারুই বলেন, “গরমের সময়ে প্রতি বছর রক্তদান শিবির কম হয়। করোনায় এই শিবির আরও কমেছে। সেই সঙ্গে করোনার প্রতিষেধক নেওয়ার নিয়মে বৃহৎ অংশের দাতা রক্তদানের আওতার বাইরে চলে যাওয়ার ভয় ছিল। নতুন সিদ্ধান্ত তাই স্বাগত।” চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বলেন, “এ দেশে আপাতত করোনার দুই প্রতিষেধক কোভ্যাক্সিন ও কোভিশিল্ড দেওয়া হচ্ছে। এই দু’টি প্রতিষেধকের ধরন ভিন্ন হলেও এগুলির যে কোনও ডোজ় নেওয়ার ১৪ দিন পরেই রক্তদান করতে পারবেন ইচ্ছুকেরা। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে রক্তের সঙ্কটের আশঙ্কা কিছুটা হলেও দূর হবে।”