এফবিআইয়ের সঙ্গে যৌথ ভাবে এগোতে চাইছে বিধাননগর পুলিশ। প্রতীকী ছবি।
তথ্যপ্রযুক্তি জগতের জালিয়াতদের ধরতে এ বার আমেরিকার তদন্তকারী সংস্থা এফবিআইয়ের সঙ্গে যৌথ ভাবে এগোতে চাইছে বিধাননগর পুলিশ। যোগাযোগ রাখা হচ্ছে আমেরিকান দূতাবাসের সঙ্গেও।
গত ছ’মাসে অন্তত ৪৫টি ভুয়ো কল সেন্টারে হানা দিয়ে ৪৩০ জনকে গ্রেফতার করেছে বিধাননগর পুলিশ। গত বুধবারও নিউ টাউন থেকে উদ্ধার হয় প্রায় চার কোটি টাকা। যার পুরোটাই ভুয়ো কল সেন্টার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে দাবি পুলিশের। পুলিশ জানিয়েছে, নিউ টাউনে যে ছয় থেকে সাতটি ভুয়ো কল সেন্টারের হদিস মিলেছে, সেগুলির মালিক গৌরব সোনি ও সৌরভ সোনি নামে দুই জালিয়াত ভাই। গত রবিবার নিউ টাউনের পুলিশ লিলুয়া থেকে তাদের গ্রেফতার করে। কিন্তু, সোমবার জামিন পেয়েই তারা উধাও হয়ে যায়।
বিধাননগরের নগরপাল গৌরব শর্মা বৃহস্পতিবার জানান, বিধাননগর পুলিশের পাশাপাশি এফবিআই-ও তাদের খুঁজছে। কারণ, আমেরিকার বহু বিশিষ্ট নাগরিককে সোনিরা ঠকিয়েছে। নগরপাল বলেন, ‘‘এফবিআইয়ের নাম করে আমেরিকার এক বিশিষ্ট চিকিৎসককে ফোন করে ভয় দেখিয়েছিল সোনি ভাইরা। বলা হয়, তিনি নাকি রোগীদের প্রয়োজনের থেকে বেশি মাত্রায় ওষুধ দিচ্ছেন। ওই চিকিৎসকের থেকে প্রচুর টাকা নিয়ে নেয় তারা। এফবিআই সোনিদের খুঁজছে। আমরাও এফবিআই এবং আমেরিকান দূতাবাসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।’’
অন্যান্য দেশের তদন্তকারী সংস্থাগুলির সঙ্গেও বিধাননগর পুলিশ যোগাযোগ রেখে চলছে। সূত্রের খবর, ভুয়ো কল সেন্টারের মাধ্যমে প্রতারিত, নিউজ়িল্যান্ডের বাসিন্দা এক ব্যক্তির গোপন জবানবন্দি ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, সোনিরা আমেরিকার একটি অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার নাম করে এক ব্যক্তিকে ফোন করে বলেছিল, তাঁর পার্সেলে মাদক রয়েছে। ওই ব্যক্তির থেকেও কয়েক হাজার ডলার হাতিয়েছিল তারা।
ইংরেজিতে কথা বলায় পারদর্শী তরুণ-তরুণীদের ‘কলার’ হিসাবে নিয়োগ করত সোনিরা। লিলুয়াতেও ভুয়ো কল সেন্টারের পরিকাঠামো তৈরি করছিল দুই ভাই। বিধাননগর পুর এলাকার একাধিক অতিথিশালাও তারা নিয়ে রেখেছিল ভুয়ো কল সেন্টার চালাতে। সে সব জায়গায় পুলিশ তালা লাগিয়ে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবারও কয়েকটি কল সেন্টারে হানা দেয় পুলিশ। সেগুলির নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বুধবার উদ্ধার হওয়া টাকা হাওয়ালার মাধ্যমেই এনে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল নিউ টাউনের দু’টি ফ্ল্যাটে। সেই টাকা দিয়ে কী করার মতলব ছিল সোনিদের, সেটাই জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।