এমন স্কুলগাড়ি নিয়েই নির্দেশিকা জারি করেছে বিধাননগর পুলিশ। ফাইল চিত্র
পোলবায় স্কুলগাড়ি দুর্ঘটনায় এক পড়ুয়ার মৃত্যুর পরে পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে পুলিশ। তারই অঙ্গ হিসেবে বিধাননগর পুলিশ স্কুলগাড়ি, স্কুলবাস এবং প্রাইভেট গাড়ির ক্ষেত্রে নির্দেশিকা স্থির করল।
গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন যদি ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য হয়, তবে সেই গাড়িতে পড়ুয়াদের স্কুলে যাতায়াত বেআইনি বলেই ধরা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ফলে ভবিষ্যতে ওই ধরনের গাড়ি স্কুলের পড়ুয়াদের পরিবহণের কাজে লাগালে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে বলেও বিধাননগর কমিশনারেটের তরফে স্পষ্ট করা হয়েছে।
পাশাপাশি স্কুলবাস এবং স্কুলগাড়ির ক্ষেত্রেও কয়েকটি নির্দেশিকা নির্দিষ্ট করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। যেমন, স্কুলবাসের ক্ষেত্রে ফিটনেস পরীক্ষা, পারমিট, বিমার নথি রাখতে হবে গাড়িতে। স্কুল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি নজরে রাখতে হবে।
গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, বিশেষত ব্রেক, টায়ার, স্টিয়ারিং ইত্যাদির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। গাড়িতে ভেহিকল লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস ভিএলটিডি) এবং স্পিড লিমিটিং ডিভাইস (এসএলডি) রাখতে হবে। গাড়ির দরজা বা জানলা থেকে পড়ুয়াদের উঁকিঝুঁকি দেওয়া আটকাতে পদক্ষেপ করতে হবে। প্রয়োজনে জানলায় অতিরিক্ত রড আটকাতে হবে। গাড়িগুলিকে হলুদ রঙ করতে হবে, তার মধ্যে নীল রঙের স্ট্রাইপ থাকবে। বাসের ভিতরে ব্যাগ রাখার জায়গা করতে হবে। অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র এবং ফার্স্ট-এইড বক্স রাখতে হবে গাড়িতে। চালকদের ক্ষেত্রে ভারী গাড়ি চালানোর ন্যূনতম ৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কনডাক্টরের লাইসেন্স থাকতে হবে। পড়ুয়ারা ঠিক মতো বাসে উঠছে কিংবা নামছে কি না তা নজরদারিতে রাখতেই হবে।
গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন বাণিজ্যিক নম্বরের হলে সে সব ক্ষেত্রেও কয়েকটি নির্দেশিকা তৈরি করেছে পুলিশ। যেমন, গাড়িতে ফিটনেস সার্টিফিকেট, বিমা, পারমিট-সহ প্রয়োজনীয় নথি রাখতেই হবে চালকদের। ১০ বছরের বেশি পুরনো গাড়িকে স্কুলগাড়ি হিসেবে ব্যবহার করতে হলে নিয়মিত ভাবে গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। গাড়িতে ভিএলটিডি এবং এসএলডি লাগাতে হবে। গাড়ির গায়ে সুস্পষ্ট ভাবে ‘স্কুলবাস’ লিখতে হবে। নথিভুক্ত চালককেই স্কুলগাড়ি চালাতে দেওয়া হবে। নথিভুক্ত নয় এমন চালককে গাড়ি চালাতে দেওয়া যাবে না।
পুলিশ জানায়, নির্দেশিকা না মানা হলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে। যদিও চালকদের একাংশের বক্তব্য, তাঁরা সব রকমের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তাঁদের পাল্টা বক্তব্য, এমন নিয়ম মানতে হলে গাড়ির সংখ্যা কমে যাবে। সে ক্ষেত্রে তাঁদের লাভের দিকটা কী ভাবে দেখা হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে চালকদের।