ভাঙাচোরা: রাস্তার এমনই হাল কাদাপাড়ার কাছে সল্টলেকে ঢোকার মুখে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য।
সল্টলেকে পুজোর সময়ে ট্র্যাফিক ব্যবস্থা মসৃণ রাখতে হলে অবিলম্বে সেখানকার রাস্তার হাল ফেরানো প্রয়োজন। বিধাননগর পুরসভাকে এমনটাই জানাল বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। সম্প্রতি দুর্গাপুজো নিয়ে পুলিশ ও পুরসভার মধ্যে বৈঠক হয়। সেখানেই কমিশনারেটের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রাস্তা সারানো না হলে পুজোর সময়ে সল্টলেকের ট্র্যাফিক ব্যবস্থা মসৃণ রাখা সম্ভব হবে না।
এ বছরের গোড়া থেকেই বিভিন্ন রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে একাধিক বার সমালোচনার মুখে পড়েছে বিধাননগর পুরসভা। বর্তমানে সল্টলেকের সিংহভাগ রাস্তাই ভেঙেচুরে যাওয়ায় বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। ওই বৈঠকে ট্র্যাফিকের পদস্থ আধিকারিকেরাও উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের তরফেই রাস্তার বিষয়টি পুরসভাকে জানানো হয়েছে। বিধাননগরের ডিসি (সদর) বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘সল্টলেকে বহু বড় বড় পুজো রয়েছে। উৎসবের দিনগুলোয় এমনিতেই রাস্তায় গাড়ির চাপ থাকবে। ওই সময়ে বেহাল রাস্তার কারণে ট্র্যাফিকের গতি কমে গেলে সমস্যা তৈরি হবে। তাই পুজোর আগেই রাস্তার হাল ফেরাতে বলা হয়েছে পুরসভাকে।’’ মঙ্গলবার দেখা যায়, বিভিন্ন রাস্তার বড় বড় গর্তগুলি পুলিশ গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দিয়েছে।
সম্প্রতি ডুরান্ড কাপের খেলা দেখার জন্য কাদাপাড়ার দিক থেকে ইএম বাইপাস হয়ে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে পৌঁছতে গিয়ে ভাঙা রাস্তার কারণে নাজেহাল হন দর্শকদের অনেকে। ওই জায়গায় এক থেকে দেড় হাত চওড়া একাধিক গর্ত রয়েছে বলে অভিযোগ। পাশাপাশি, ব্রডওয়ে, ফার্স্ট অ্যাভিনিউ-সহ একাধিক বড় গাড়ি চলাচলের রাস্তা এবং ব্লকের রাস্তা ভেঙেচুরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন। ওই সমস্ত রাস্তায় চলাচলের জেরে এক দিকে যেমন গাড়ির যন্ত্রাংশ বিকল হচ্ছে, তেমনই বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। বিশেষ করে মোটরবাইক চালকদের জন্য। যে কোনও সময়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে বৈঠকে ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে বিধাননগর পুরসভাকে জানানো হয়েছে বলে খবর। তাতে পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, পুজোর আগে সল্টলেকের রাস্তার অস্থায়ী মেরামতি করা হবে। পুজোর পরে দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে রাস্তা সারানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, বিধাননগরের রাস্তা সারাই নিয়ে অনেক দিন ধরেই জটিলতা দেখা দিয়েছে আর্থিক সঙ্কটের কারণে। বহু রাস্তা সারানোর ক্ষেত্রে ঠিকাদারেরা দরপত্র তুলতে চাননি। যে কারণে পুরসভার তরফে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়, কিছু রাস্তা কেএমডিএ এবং পূর্ত দফতরকে দিয়ে দেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে। যদিও আধিকারিকেরা জানান, রাস্তা মেরামতি ও নতুন করে তৈরির জন্য ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে নগরোন্নয়ন দফতর। এর পাশাপাশি, ভূগর্ভে কেব্ল পেতে রাখা সংস্থাগুলির কাছ থেকে রাস্তা কাটার মূল্য বাবদ প্রাপ্ত অর্থ মিলিয়ে অঙ্ক বেড়ে ২০ কোটির কাছাকাছি হয়েছে। ওয়ার্ড-পিছু রাস্তা সারাইয়ের জন্য টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে। ফলে এ বার রাস্তা মেরামতি ও নতুন করে তৈরি করতে সমস্যা হবে না।
ডেপুটি মেয়র অনিতা মণ্ডল বলেন, ‘‘নগরোন্নয়ন দফতর রাস্তা সারাইয়ের বরাদ্দ মঞ্জুর করেছে। আমরা টেন্ডার ডাকা শুরু করছি। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভাবাচ্ছে। কারণ, মেরামতি কিংবা রাস্তা তৈরি— কোনও কাজই বৃষ্টিতে করা সম্ভব নয়। তাতে অর্থ জলে দেওয়া হবে।’’