বিধাননগর পুরসভা।
রাস্তা মেরামতির জন্য ফের রাজ্য সরকারের দ্বারস্থ হল বিধাননগর পুরসভা। সম্প্রতি পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের কাছে প্রায় ১৪৮ কোটি টাকার রাস্তা মেরামতির খসড়া প্রস্তাব জমা করেছে পুরসভা। এর আগে প্রায় ৭৬ কোটি টাকার খসড়া প্রস্তাব দিয়েছিল পুরসভা। বর্ষার মরসুমের আগে রাস্তা মেরামতি কাজ অধিকাংশ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে বলে পুরকর্তারা জানান।
যদিও বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভার মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের অক্টোবর মাসে। প্রায় সাড়ে চার বছরের মধ্যে রাস্তা মেরামতির কাজ শেষ করা গেল না। বাকি সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে তার নিশ্চয়তা কোথায়?
পুরকর্তাদের একাংশের কথায়, ‘‘পুরসভার আয় নির্দিষ্ট। তা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। বিধাননগরের সঙ্গে রাজারহাট-গোপালপুর পুর এলাকা মিশে যাওয়ায় রাস্তা বেড়েছে কয়েক গুণ। ফলে ব্যয়ও বেড়েছে বহু গুণ। সে কারণে রাজ্য সরকারের কাছে আর্থিক সহযোগিতার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’’
বাগুইআটি, কেষ্টপুর, রাজারহাট-গোপালপুরের অংশ থেকে শুরু করে সল্টলেকের বিভিন্ন রাস্তার অবস্থা দীর্ঘ দিন ধরে বেহাল। ২০১৯-এ মেয়র পরিবর্তন হওয়ার পরে পুরসভা জানিয়েছিল, বর্ষার মরসুম শেষ হলে রাস্তা মেরামতির কাজ শেষ করা হবে। সে সময়ে প্রাথমিক ভাবে প্রায় ৭৬ কোটি টাকার খসড়া প্রস্তাব জমা করা হয়েছিল পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের কাছে। পুরসভা সূত্রের খবর, যে পরিমাণ টাকা এসেছে তা ব্যবহার করে একাধিক রাস্তা মেরামতির কাজ করা হয়েছে।
কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় সেই রাস্তার পরিমাণ কম বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। কেষ্টপুরের এক বাসিন্দা রমেন মণ্ডল জানান, পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের জন্য পাইপলাইন পাতার কাজ শেষ হয়েছে। অথচ রাস্তা মেরামতি হল না। বাসিন্দারা জানান, গত বর্ষায় হাঁটাচলা করতে প্রাণান্তকর অবস্থা হয়েছিল। আর কয়েক মাস পরে বর্ষার মরসুম শুরু হবে, অথচ দীর্ঘ মেয়াদের ভিত্তিতে মেরামতি বলতে যা বোঝায়, তা কিছুই প্রায় হয়নি। শুধু পুজোর পরে সারাইয়ের কাজ করা হয়েছে।
একই অভিযোগ সল্টলেকবাসীদেরও। তাঁদের একটি বড় অংশ জানান, ব্লকের ভিতরের রাস্তাগুলির সংস্কারের প্রয়োজন। তবে শুধু রাস্তাই নয়, বেশ কিছু জায়গায় ফুটপাতের অবস্থাও বেহাল। হাঁটাচলার সময়ে অসতর্ক হলে যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে বলেও জানাচ্ছেন তাঁরা।
পুরসভার পূর্ত দফতরের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায় জানান, রাস্তা মেরামতির জন্য প্রায় ১৪৮ কোটি টাকার খসড়া প্রস্তাব জমা করা হয়েছে। এর আগে প্রায় ৭৬ কোটি টাকার খসড়া প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে কিছু রাস্তা মেরামত করা হয়েছে। খসড়া প্রস্তাবের অনুমোদন হলে বাকি কাজ যতটা সম্ভব বর্ষার আগে শেষ করার চেষ্টা করা হবে বলে তিনি জানান।