বিধাননগর পুরসভা। ফাইল চিত্র।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে, নিজেদের ‘দিদির সৈনিক’ বলে দাবি করে বুধবার তৃণমূল পরিচালিত বিধাননগর পুরসভা চত্বরে দাঁড়িয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ করলেন তাঁরা। তাঁদের দাবি পূরণ না হলে আন্দোলনে বসার হুঁশিয়ারিও দিলেন বিধাননগর পুরসভার অস্থায়ী কর্মীদের একটি অংশ।
সমকাজে সমবেতন, চাকরিতে স্থায়ীকরণ-সহ একাধিক দাবি নিয়ে বহু দিন ধরেই পুর কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করছেন ওই কর্মীরা। তাঁদের বেশির ভাগই পুরনো রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার অস্থায়ী কর্মী। কেউ পাম্প চালান, কেউ বিদ্যুতের কাজ করেন, কেউ পুর হাসপাতালে কর্মরত, কেউ গাড়িচালক। তাঁদের অভিযোগ, বিধাননগর কর্পোরেশন তৈরির পরে সেখানকার কর্মী হয়েও বেতনে সমতা আসেনি।
বিধাননগর পুর নিগম তৃণমূল পুর কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শুভাশিস ঘোষের অভিযোগ, ‘‘রাজারহাটের অস্থায়ী কর্মীরা কম বেতন পান। বহু বার পুর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও বেতনের বৈষম্য ঘোচেনি। তাঁদের স্থায়ীকরণ নিয়েও পুরসভা ধোঁয়াশায় রাখছে।’’
এ দিন ওই অস্থায়ী কর্মীরা পুর কমিশনার সুজয় সরকারের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। ডিসেম্বরের প্রথম বোর্ড মিটিংয়ের আগে তাঁদের দাবি-দাওয়া নিয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত পুরসভা না-নিলে, তাঁরা অনশনে বসার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। তাঁরা জানান, ৯০৩ জন অস্থায়ী কর্মীর নাম পুর বিষয়ক দফতরে পাঠানো হয়েছে বলে পুরসভা জানিয়েছে। তাঁদের অনেকেই ১০-১৫ বছর চাকরি করছেন। শুভাশিসের কথায়, ‘‘সরকারি অন্যান্য আর্থিক সুবিধা তাঁদের প্রাপ্য। পুরসভা সেই ফাইল পুর বিষয়ক দফতরে পাঠালেও তার অবস্থা কী, তা স্পষ্ট করছে না।’’
পুর কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি, রাজারহাট-গোপালপুরে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল। গ্রেড অনুযায়ী বিধাননগরের থেকে রাজারহাট-গোপালপুর পিছনের সারির পুরসভা ছিল। তা-ই অস্থায়ী কর্মীদের বেতনও কম ছিল।
মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘ওঁদের বেতন বৈষম্য কাটানোর চেষ্টা চলছে। গত বছর পুজোয় এক দফা বেতন বৃদ্ধিও হয়েছে। সল্টলেক ও রাজারহাটের কর্মীদের সমবেতন দিতে সময় লাগবে। তবে এ ভাবে পুরসভায় এসে বিক্ষোভ দেখানো দল কিংবা সরকারের নীতি নয়।’’
পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, সরকারি পরীক্ষা ছাড়া স্থায়ীকরণ সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে, অস্থায়ী কর্মীদের ইচ্ছে মতো স্থায়ী করা যাবে না। পরীক্ষায় বসতে হবে।’’