Bhabanipur Bypoll

Bhabanipur Bypoll: উপনির্বাচনের আগে জমা জল সরাতে অতি তৎপর পুরসভা

ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্র এলাকার ৭০ ও ৭৭ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক রাস্তায় জল জমে থাকায় দুর্ভোগ বাড়ে স্থানীয়দের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:১৩
Share:

দুর্ভোগ: টানা বৃষ্টিতে ফের জলমগ্ন হল ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের নানা জায়গা। (১) হেশ্যাম রোডে জল ঠেলে যাত্রা,ছবি: রণজিৎ নন্দী

নিম্নচাপের প্রভাবে মঙ্গলবার রাত থেকে টানা বৃষ্টির জেরে জল জমল শহরের কিছু এলাকায়। আজ, বৃহস্পতিবার ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। তাই ওই সমস্ত এলাকার জমা জল সরাতে বুধবারের পুর তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। ভবানীপুর বিধানসভা এলাকায়, বিশেষত একবালপুর, মোমিনপুর, এলগিন রোডে জমা জল সরাতে পুর নিকাশি দফতরের তৎপরতা ছিল সকাল থেকেই। এ দিন বালিগঞ্জ পাম্পিং স্টেশন পরিদর্শন করেন পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন ফিরহাদ হাকিম। সন্ধ্যায় একবালপুর-মোমিনপুর এলাকাও ঘুরে দেখেন তিনি। কাজের তদারকি করতে ভবানীপুর বিধানসভা এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তারক সিংহও।

Advertisement

ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্র এলাকার ৭০ ও ৭৭ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক রাস্তায় জল জমে থাকায় দুর্ভোগ বাড়ে স্থানীয়দের। তবে আজ, বৃহস্পতিবার ওই বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে আগে থেকেই পুরসভা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস পেয়ে গত বৃহস্পতিবার পুর কমিশনার বিনোদ কুমারের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্র এলাকায় পুরসভার নিকাশি পাম্পিং স্টেশনগুলিতে (কালীঘাট, বালিগঞ্জ, মোমিনপুর) নজরদারি আরও বাড়াতে হবে ও বেশি কর্মী রাখতে হবে। এ দিন সকাল থেকেই একবালপুর, মোমিনপুরের কিছু রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। একবালপুর লেন, ডক্টর সুধীর বসু রোড, মহম্মদ আলি রোড, ইব্রাহিম রোড, মোমিনপুর রোড, রজব আলি লেন, মনসাতলা লেন, ডেন্ট মিশন রোডে জল দাঁড়িয়ে যায়। তবে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সকাল থেকেই একাধিক জেট-কাম-সাকশন মেশিনকে কাজে লাগায় পুরসভা। বসানো হয় একাধিক পাম্প। ম্যানহোল ও গালিপিটগুলি থেকে জল সরাতেও পর্যাপ্ত কর্মী মোতায়েন করা হয়।

জল-যন্ত্রণার একই ছবি দেখা যায় ওই বিধানসভা কেন্দ্র এলাকার ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের এলগিন রোড লাগোয়া রাস্তাতেও। স্থানীয় ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর অসীম বসু এ দিন সকাল থেকেই রাস্তায় নামেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার ওয়ার্ডে জমা জল সরাতে দু’টি জেট-কাম-সাকশন মেশিন কাজ করছে। ম্যানহোল খুলে কর্মী দাঁড় করিয়ে জল সরানো হচ্ছে। গালিপিটের ময়লা সরাতেও কাজ হচ্ছে।’’

Advertisement

একবালপুরে একটি বুথে জল এড়িয়ে ইভিএম নামাচ্ছেন ভোটকর্মীরা। বুধবার।

তবে শুধু ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্র এলাকাই নয়, মঙ্গলবারের রাতভর বৃষ্টির দাপট বুধবার সকালে বাড়লে জলমগ্ন হয়ে পড়ে উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকাও। উত্তরের আমহার্স্ট স্ট্রিট, ঠনঠনিয়া, কলাকার স্ট্রিট, এম জি রোড, কলেজ স্ট্রিট, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, পাতিপুকুর, বিটি রোডের একাংশ থেকে শুরু করে দক্ষিণে ক্যামাক স্ট্রিট, শরৎ বসু রোড, বালিগঞ্জ, তারাতলা, নিউ আলিপুর, একবালপুর, মোমিনপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল এ দিন রাত পর্যন্ত জলমগ্ন ছিল। নিউ আলিপুরের রাস্তায় গাছ ভেঙে পড়ে যান চলাচলে সাময়িক ব্যাঘাত ঘটে। জমা জল থেকে রেহাই পায়নি বাইপাস সংলগ্ন আনন্দপুর, পঞ্চসায়র, মুকুন্দপুরের বেশ কিছু অংশও। জমা জল ডিঙিয়ে স্থানীয় একাধিক বেসরকারি হাসপাতালে পৌঁছতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় রোগী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের।

পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাত থেকে এ দিন দুপুর ২টো পর্যন্ত কলকাতায় সব চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে বেহালার সিপিটি ক্যানাল পাম্পিং স্টেশন এলাকায় (১৩২ মিলিমিটার)। মোমিনপুর (১১৫ মিলিমিটার), বেহালা ফ্লাইং ক্লাব (১১১ মিলিমিটার), বেলগাছিয়া (৯৯ মিলিমিটার), কালীঘাট (৯৬ মিলিমিটার), যোধপুর পার্ক, (৮৫ মিলিমিটার), বালিগঞ্জ (৭১ মিলিমিটার) ও চেতলা (৭৯ মিলিমিটার) পাম্পিং স্টেশন এলাকাও বৃষ্টির কারণে কমবেশি জলমগ্ন হয়ে পড়ে।

তবে পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ‘‘বৃষ্টির জল দ্রুত বার করতে সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সমস্ত নিকাশি পাম্পিং স্টেশনে ২৪ ঘণ্টা সিনিয়র অফিসারেরা দাঁড়িয়ে থেকে নজরদারি চালাচ্ছেন। পুরসভার কন্ট্রোল রুমে সব সময়ে থাকবেন পদস্থ আধিকারিকেরা। আগামী তিন দিন এই বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। আমিও থাকব কন্ট্রোল রুমে।’’

তারকবাবু জানিয়েছেন, জোয়ারের কারণে লকগেট বন্ধ থাকায় জমা জল নামতে দেরি হচ্ছে। এ দিন ভোর সাড়ে ৪টে থেকে সকাল সওয়া ৮টা পর্যন্ত গঙ্গা লাগোয়া লকগেটগুলি জোয়ারের জন্য বন্ধ ছিল। কারণ, তা না হলে গঙ্গার জল নিকাশি নালা দিয়ে ঢুকে এসে হিতে বিপরীত হতে পারত। জোয়ারের জন্য এ দিন বিকেল পৌনে ৫টা থেকে রাত পৌনে ৯টা পর্যন্ত আবারও বন্ধ ছিল লকগেট। ফলে জমা জল নামতে দেরি হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement