Belur Math

Belur Math: সারদাদেবীর জন্মতিথিতেই মঠ ও মিশনের ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত

করোনা অতিমারির কারণে গত বছর সারদাদেবীর তিথি পুজোর দিন মঠে আসার সুযোগ পাননি ভক্তেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:০৮
Share:

আরাধনা: সারদাদেবীর ১৬৯তম জন্মতিথি উপলক্ষে পুজো। রবিবার, বাগবাজার মায়ের বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র।

মঙ্গলারতি দিয়েই রবিবার ভোর থেকে শুরু হয়েছিল সারদাদেবীর ১৬৯তম জন্মতিথি উদ্‌যাপন। সারা দিন ধরে বিশেষ পুজো, হোম, সঙ্গীত, পাঠ-সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই তা পালিত হল বেলুড় মঠ ও রামকৃষ্ণ মঠ বাগবাজারে (মায়ের বাড়ি)। দু’জায়গাতেই এ দিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অসংখ্য ভক্ত ও দর্শনার্থীরা ভিড় করেন। রামকৃষ্ণ মিশনের ১২৫তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান আগামী ১ মে থেকে এক বছর ধরে বিশ্বব্যাপী পালনের কথাও এ দিন জানিয়েছেন মিশন কর্তৃপক্ষ। যার উদ্যোক্তা ভারত সরকার।

Advertisement

করোনা অতিমারির কারণে গত বছর সারদাদেবীর তিথি পুজোর দিন মঠে আসার সুযোগ পাননি ভক্তেরা। এ দিন অবশ্য সাধারণের জন্য মঠ খোলা থাকায় করোনা বিধি মেনেই সারদাদেবীকে দর্শন করে প্রণাম সারলেন তাঁরা। তবে যাঁরা আসতে পারেননি, তাঁদের জন্য বেলুড় মঠ ও বাগবাজার মায়ের বাড়ি দুই জায়গা থেকেই ইউটিউবে বা ওয়েবসাইটে সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা ছিল। সারদাদেবীর জন্মতিথি উপলক্ষে এ দিন বাগবাজারের উদ্বোধন কার্যালয়ের সারদানন্দ হলে ‘অনন্তরূপিণী মা সারদা’ এবং ‘গিরিশচন্দ্র ঘোষ-শ্রীরামকৃষ্ণের এক বোহেমিয়ান ভক্ত’— এই দু’টি বইয়ের সূচনা করেন বাগবাজার মঠের অধ্যক্ষ স্বামী নিত্যমুক্তানন্দ।

অন্য দিকে, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টকে ভক্তেরা রবিবার থেকেই পুনরায় দর্শন ও প্রণাম করতে পারছেন। তবে এর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছেন বেলুড় মঠ কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানান, ওই প্রবীণ সন্ন্যাসীদের সামনে স্বচ্ছ ফাইবার গ্লাসের একটি ঘেরাটোপ থাকছে। তার বাইরে থেকেই দর্শন ও প্রণাম সারতে হবে। আগামী ১২ জানুয়ারি যুব দিবসও স্বাভাবিক ভাবেই পালিত হবে বলে জানিয়েছেন মিশন কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

এ দিন প্রায় ৩৫ হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থী উপস্থিত হন বেলুড় মঠে। বসে প্রসাদ খাওয়ার ব্যবস্থা এখনও চালু না হলেও, মঠে উপস্থিতদের লাড্ডু প্রসাদ দেওয়া হয়েছে। অতিমারির আগে, সারদাদেবীর জন্মতিথিতে মঠের মূল মন্দিরের পাশের মাঠে ম্যারাপ বেঁধে সেখানেই সমস্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন হত। করোনার কারণে বদলেছে সেই নিয়ম। মূল মন্দিরে সারদাদেবীর ছবির সামনেই সকাল থেকে চলে ভজন, কীর্তন, লীলাগান, ধর্মসভা। সারদাদেবীর মন্দিরের সামনেও ম্যারাপ বেঁধে হয় চণ্ডীপাঠ, স্তবগান-সহ অন্যান্য অনুষ্ঠান। বাগবাজারে মায়ের বাড়ির যোগানন্দ হল ও উদ্বোধন কার্যালয়ের সারদানন্দ হলেও ভজন, সারদাদেবীর জীবন ও বাণী আলোচনা-সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়। বাগবাজারে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের হাতে ভোগপ্রসাদ দেওয়া হয়।

বেলুড় মঠের সারদাদেবীর মন্দিরের শতবর্ষ উপলক্ষে শীঘ্রই তিথি দেখে সপ্তসতী কিংবা চণ্ডী হোম করার পরিকল্পনা করেছেন মঠ কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, আগামী বছর ১ মে বেলুড় মঠ থেকেই সূচনা হবে রামকৃষ্ণ মিশনের ১২৫তম বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান। ২০২৩-র ১ মে পর্যন্ত যা চলার কথা। ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে এখনই স্পষ্ট করে জানাতে চাননি মঠ কর্তৃপক্ষ।

তবে বর্ষব্যাপী ওই অনুষ্ঠানের আয়োজনে কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ বলেন, “মিশনের ১২৫তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের জন্য সরকারকে অনুরোধ করার প্রাসঙ্গিকতা মনে করিনি। অতীত, বর্তমান এমনকি ভবিষ্যতের ইতিহাসেও রামকৃষ্ণ ভাবান্দোলনের কথা ভেবে কেন্দ্রীয় সরকার নিজেই বিশ্বব্যাপী ওই অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে।” তিনি, আগামী মার্চ-এপ্রিল থেকে বেলুড় মঠ অতিমারির আগের পরিস্থিতিতে ফিরে যাবে বলেই আশা করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement