...স্রোতে ভাসা: জলমগ্ন সুকিয়া স্ট্রিটে ভাসছে আবর্জনা। শুক্রবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী।
নিম্নচাপের বৃষ্টিতে প্লাবিত হল উত্তর শহরতলির বিস্তীর্ণ এলাকা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে টানা প্রবল বর্ষণে জলে টইটম্বুর হয়ে যায় বিদ্যাধরীর শাখানদীর সঙ্গে যুক্ত উত্তর শহরতলির বিভিন্ন খাল। তার জেরে শুক্রবার জলবন্দি হয়ে পড়ে বারাসত, মধ্যমগ্রাম, হৃদয়পুর, বিড়া-সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল।
বারাসত ও মধ্যমগ্রাম এলাকার বৃষ্টির জল বিভিন্ন খাল হয়ে বিদ্যাধরীর শাখা নদীতে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নাব্যতা কমে যাওয়ায় বাণীকণ্ঠ, সুতি, টোনা কিংবা কাটা খাল জল টানতে না পারায় এই দুর্ভোগ। বাণীকণ্ঠ নগর, কালিকাপুর, ক্ষুদিরাম পল্লি কিংবা বনমালিপুরে বাড়ির ভিতরে জল ঢুকে গিয়েছে। বারাসতের বামুনমুড়োর পীরগাছার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভাগাড় ভেসে আবর্জনা-সহ নোংরা জল বাড়িতে ঢুকে পড়েছে। মধ্যমগ্রামের পাটুলি-শিবতলা এলাকা যথারীতি জলমগ্ন। বিদ্যাধরীর শাখানদীর জল উপচে ওঠায় মাছের ভেড়ির বাঁধ ভাঙার উপক্রম হয় শাসনে। বিদ্যাধরী ক্যানাল ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সন্দীপ গুপ্তের দাবি, ‘‘খালের সমস্যা নেই। প্রবল বর্ষণ হয়েছে। সেই সঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে জল এসে খালে পড়ছে। ভারী বৃষ্টি না হলে জল নেমে যাবে।’’
বারাসত পুরসভার প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মানুষ সচেতন না হলে এমনটাই হবে। নিষেধ করা সত্ত্বেও প্লাস্টিক ফেলায় নিকাশি নালার মুখ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।’’ ব্যারাকপুর মহকুমার কামারহাটি, পানিহাটি, আগরপাড়া, বি টি রোড, নীলগঞ্জ রোডের মতো এলাকার কোথাও কোথাও জল ঢুকে গিয়েছে বাড়ির ভিতরে। বরাহনগরের রাস্তায় জলে মাছের দেখাও মেলে। জল জমে যাওয়ায় রেল ইঞ্জিন ও লোকোমোটিভ নির্মাণকারী সংস্থা টেক্সম্যাকোর আগরপাড়ার কারখানায় কর্তৃপক্ষ কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হন।
ব্রিটিশ আমলের নিকাশি ব্যবস্থা। ফলে জলে ডুবেছে টিটাগড় পুরসভার বিভিন্ন এলাকা। সকালে টিটাগড় পুরসভার সামনেই প্রায় হাঁটু সমান জল জমে থাকতে দেখা যায়। যদিও টিটাগড়ের নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে সদ্য উদ্যোগী হয়েছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। এলাকা জলমগ্ন ছিল ব্যারাকপুর, ভাটপাড়ার মতো জায়গাগুলিতেও। উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, ‘‘বাগজোলা খলের জল ব্যাক ফ্লো করায় অনেক জায়গায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। সেচ দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।’’