প্রতীকী ছবি।
অনেক ক্ষণ ধরে সহকর্মী-বন্ধুর কোনও রকম সাড়াশব্দ না-মেলায় দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকেছিলেন এক যুবক। ঢুকে যা দেখলেন, তাতে তিনি হতবাক! তাঁর বন্ধু অচৈতন্য অবস্থায় বিছানায় পড়ে রয়েছেন। মাথা থেকে গলা পর্যন্ত মোড়া প্লাস্টিকে। পাশে রাখা হিলিয়াম গ্যাসের একটি সিলিন্ডার। আর সেই প্লাস্টিকের ভিতরে তাঁর নাকের সামনে ওই সিলিন্ডারের নল।
খবর পেয়ে পুলিশ আসে। ওই যুবককে দ্রুত বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম পি সমরিথ (২৭)। সোমবার সকালে এই ঘটনা ঘটে সল্টলেকের লাবণি আবাসনে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই যুবকের বাড়ি হায়দরাবাদে। কর্মসূত্রে এখানে থাকতেন। একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের চৌরঙ্গি শাখায় কর্মরত ছিলেন তিনি। ওই ব্যাঙ্কেরই দুই সহকর্মীর সঙ্গে সল্টলেকের লাবণি আবাসনে এফ ব্লকের একটি ফ্ল্যাটে ২০২০ সালের অগস্ট থেকে পেয়িং গেস্ট হিসেবে ছিলেন তিনি।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকালে তিন বন্ধুর এক জন অফিসের জন্য বেরিয়ে যান। আর এক জন জলখাবার খেতে বাইরে বেরিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন, পি সমরিথের ঘরের দরজা বন্ধ। অনেক ডেকেও সাড়া মেলেনি। তখন দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তিনি দেখেন, ওই যুবক অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে আছেন।
মৃতের দুই বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই যুবক কোনও কারণে কিছু দিন ধরে উদ্বেগ ও মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোটও মিলেছে। সূত্রের খবর, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হবে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, ওই যুবক নিজেই নিজের মাথা থেকে গলা পর্যন্ত প্লাস্টিকে মুড়েছিলেন। তার পরে হিলিয়াম গ্যাস সিলিন্ডারের নলটি নাকের সামনে রাখেন তিনি। এর পরে সেলোটেপ দিয়ে ওই প্লাস্টিক গলা পর্যন্ত আটকে দেন। তার পরেই চালু করে দেন গ্যাস। তাঁর হাতের আঙুল বেঁকে গিয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, দক্ষিণ ভারতে এ ভাবে মৃত্যুর ঘটনা আগেও বেশ কয়েকটি ঘটেছে। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, গ্যাস সিলিন্ডারটি নিজেই বাজার থেকে কিনেছিলেন ওই যুবক। ঘটনাটিকে প্রাথমিক ভাবে আত্মহত্যা বলে মনে হলেও সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ওই ফ্ল্যাটটি যাঁদের, সেই পরিবারের এক সদস্য জানান, গত এক বছর ধরে তিন জন সেখানে রয়েছেন। কিন্তু এমন কিছু যে ঘটতে পারে, তা তাঁদের কল্পনারও অতীত ছিল।