বালিগঞ্জে মহিলা পথচারীকে পিষে দেয় গাড়়িটি। নিজস্ব চিত্র।
বেপরোয়া গতিতে ছুটে অন্য গাড়িকে ওভারটেক করতে গিয়ে দু’টি গাড়িকে ধাক্কা মেরেছিল সেটি। এর পরে এক মহিলাকে পিষে দিয়েছিল বিলাসবহুল সেই বিদেশি গাড়িটি। দুর্ঘটনার সময়ে ওই গাড়ির গতি কত ছিল জানতে সেটির নির্মাণ সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছিল লালবাজার। এ জন্য সংস্থার লন্ডনের অফিসে পাঠানো হয়েছিল ওই গাড়িটির মধ্যে থাকা ‘ইভেন্ট ডেটা রেকর্ডার’। কিন্তু দু’মাস পেরিয়ে গেলেও সেই রেকর্ডারে থাকা তথ্য জানতে পারেনি পুলিশ। ফলে দুর্ঘটনার সময়ে গাড়ির গতি কত ছিল, চালক সিট বেল্ট বেঁধেছিলেন কি না, দুর্ঘটনার আগে গাড়ি কোনও সতর্কবাতা দিয়েছিল কি না কিংবা চালক গতি কমানোর চেষ্টা করেছিলেন কি না— কোনও কিছুই এখনও জানা যায়নি। সূত্রের খবর, সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে তথ্য পেতে সমস্যা হচ্ছে।
লালবাজারের ট্র্যাফিক বিভাগের এক কর্তা জানাচ্ছেন, এই তথ্য না পাওয়া যাওয়ায় দুর্ঘটনার তদন্ত আটকে আছে। এ দিকে, চার্জশিট পেশের দিন এগিয়ে আসছে। ইভেন্ট ডেটা রেকর্ডার-এর তথ্য না মেলায় এখন ফরেন্সিক রিপোর্টের অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ওই পুলিশকর্তার দাবি, ফরেন্সিক পরীক্ষার মাধ্যমে দুর্ঘটনার সময়ে গাড়ির গতি জানা সম্ভব হবে।
গত ৭ অগস্ট বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে দুরন্ত গতিতে ছুটে এসে একের পর এক গাড়িতে ধাক্কা মারে বিদেশি বিলাসবহুল গাড়িটি। এর পরে দ্রুত গতির সেই গাড়িটি এক মহিলা পথচারীকে চাপা দেয়। ওই ঘটনায় চালককে গ্রেফতার করে পুলিশ। সিসি ক্যামেরার ছবি দেখে পুলিশের অনুমান, ধাক্কা মারার সময়ে গাড়িটির গতি িছল ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের কাছাকাছি। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘ওই গাড়ির ইভেন্ট ডেটা রেকর্ডার অনেকটা বিমানের ব্ল্যাক বক্সের মতো। সব তথ্য ধরা থাকে তাতে। এর আগে কয়েকটি দুর্ঘটনার তদন্তে গাড়ির নির্মাণ সংস্থার থেকে তথ্য এনে তদন্তে সাফল্য এসেছিল। এ বারও সেই চেষ্টা করা হয়। তবে ইভেন্ট ডেটা রেকর্ডারের ভিতরের তথ্য সংস্থা এখনও না দিতে পারলেও ভবিষ্যতে দেবে বলে আমরা আশাবাদী।’’ পুলিশ জানিয়েছে, আপাতত ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্টের উপরে ভিত্তি করে চার্জশিট দাখিল করা হবে। পরে গাড়িটির নির্মাণ সংস্থার থেকে ওই তথ্য পেলে তা আলাদা ভাবে জমা দেওয়া হবে।