রত্না চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য মহিলা কমিশনে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন শোভনবাবুর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়। এ বার রত্না এবং তাঁর বাবা দুলাল দাসের বিরুদ্ধে বৈশাখী অভিযোগ আনলেন, তাঁর ‘চরিত্র হনন’ করা হয়েছে। ‘সুপারি কিলার’ নিয়োগ করে তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন রত্না ও তাঁর বাবা। বিষয়টি নিয়ে জাতীয় মহিলা কমিশনেরও দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
কমিশনের কাছে বৈশাখীর আরও অভিযোগ, এর জেরে তাঁর মানসিক শান্তি বিঘ্নিত হয়েছে। বৈশাখীর দাবি, ‘‘আমার অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য কলকাতা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। ইতিমধ্যেই অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (এসি) পদমর্যাদার এক আধিকারিক আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাঁকে যা বলার বলেছি।’’
রত্না এবং দুলালবাবুও জানিয়েছেন, বৈশাখীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিক তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। যা জানানোর, তাঁকে তাঁরা জানিয়েছেন। বৈশাখীর অভিযোগ নিয়ে রত্নার প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি ওঁর বিরুদ্ধে রাজ্য মহিলা কমিশনে নির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ জানিয়েছিলাম। উনি তার উত্তর দেননি। আগে আমার অভিযোগের উনি জবাব দিন।’’ আর মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যান তথা স্থানীয় বিধায়ক দুলালবাবুর প্রশ্ন, ‘‘বৈশাখী যদি জেনেই থাকেন তাঁকে হত্যার জন্য আমার মেয়ে সুপারি কিলার নিয়োগ করেছে, তবে সেই সুপারি কিলারের নাম কেন তিনি পুলিশকে জানাচ্ছেন না?’’
শোভন-রত্নার সম্পর্কে টানাপড়েনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নেই বলেও দাবি করেছেন বৈশাখী। তিনি বলেন, ‘‘শোভনবাবু ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আমার কোনও ভূমিকা নেই। শোভনবাবুর বিরুদ্ধে ওঁদের অভিযোগ থাকতে পারে। কিন্তু তার জন্য আমার মানহানি কেন করা হবে?’’ বৈশাখীর আরও বক্তব্য, ‘‘রত্না ও দুলালবাবুর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মানহানির মামলা করতে পারতাম, করিনি। তবে সব কিছুরই সীমা আছে।’’
মাস কয়েক আগে রাজ্য মহিলা কমিশনের কাছে বৈশাখীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগে রত্না জানিয়েছিলেন, শোভনবাবুর সঙ্গে তাঁর বৈবাহিক সম্পর্কে হস্তক্ষেপ করেছেন বৈশাখী। শোভনবাবুর ছেলে-মেয়ে এবং পরিবারের সদস্যদের তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বাধা দিয়েছেন। তাঁর দৈনন্দিন কাজ এবং আর্থিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছেন।
রাজ্য মহিলা কমিশন সূত্রের খবর, ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৈশাখীর বক্তব্য জানতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি কিছু না জানালেও শোভনবাবু কমিশনকে চিঠি লিখে জানান, তাঁর বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলা এই মুহূর্তে বিচারাধীন। তাই সেই বিষয়ে মহিলা কমিশনের হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই।
বৈশাখীর অভিযোগ নিয়ে রত্না বলেন, ‘‘রাজ্য মহিলা কমিশন বারবার ওঁকে ডেকে পাঠিয়েছিল। কিন্তু বৈশাখী যাননি। এখন রাজ্য কমিশনকে এড়িয়ে উনি জাতীয় কমিশনে গিয়েছেন।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘ওঁর অভিযোগের উত্তর দিতে আমার সমস্যা নেই। তবে যাঁর বিরুদ্ধে আমি অভিযোগ করেছি রাজ্য মহিলা কমিশনে, তিনি তাকে এড়িয়ে কী ভাবে জাতীয় কমিশনে গেলেন?