কলতান দাশগুপ্ত। ছবি: সংগৃহীত।
জামিন পেলেন না কলতান দাশগুপ্ত। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাঁকে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিল বিধাননগর আদালত।
জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নায় হামলার আশঙ্কা সংক্রান্ত একটি ফোনালাপের অডিয়ো শুক্রবারই প্রকাশ্যে এসেছিল (যার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। ওঘ ঘটনায় গ্রেফতার হন বাম যুবনেতা কলতান। ডিওয়াইএফআইয়ের মুখপত্রের সম্পাদক তিনি। সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটিরও সদস্য এই যুবনেতা। গ্রেফতার হওয়ার পর কলতান নিজে দাবি করেছিলেন, “নিশ্চয়ই এর পিছনে ষড়যন্ত্র আছে। না হলে নির্যাতিতার বিচারের আসল আন্দোলনের থেকে এ ভাবে দৃষ্টি কেন ঘুরিয়ে দেওয়া হল?” তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে সিপিএম।
তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ শুক্রবার একটি অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশ্যে আনেন। ওই ফোনালাপের দু’জন ব্যক্তির এক জনকে ‘স’ এবং অপর জনকে ‘ক’ বলে সম্বোধন করেছিলেন। কুণাল দাবি করেছিলেন, দু’জনের মধ্যে এক জন বাম যুব সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত এবং অপর জন অতি বাম যুব সংগঠনের। ঘটনাক্রমে শুক্রবারই পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন সঞ্জীব দাস। তার পর বিধাননগর পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন কলতান। তাঁর গ্রেফতারির পর থেকে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করছে সিপিএম। পুলিশ কী ভাবে এতটা নিশ্চিত হয়ে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পেগাসাসের কথা বলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “যে পুলিশ এক বছরেও ‘কালীঘাটের কাকু’র (সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র) কণ্ঠের নমুনা ধরতে পারেনি, তারা ২৪ ঘণ্টায় এই অডিয়োর কণ্ঠ কার বুঝে গেল! একেবারে নিশ্চিত করে জানিয়েও দিল?’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘খুব চাপে পড়ে এ কাজ করেছে পুলিশ। নির্দেশ আছে, তাই ধরতে হবে। ষড়যন্ত্র ধরা পড়ে গিয়েছে। আমরা শেষ পর্যন্ত লড়ে যাব। তৃণমূলের কাছে অডিয়ো রয়েছে। পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করেছে। এখনও পর্যন্ত যা যা হয়েছে, সব পরিকল্পিত।” পাশাপাশি কুণালকে কটাক্ষ করে সুজন বলেন, “ওঁর কথার জবাব দেওয়া আমার কাজ নয়। তিনি আজ এক কথা বলবেন, আগামিকাল আর এক কথা বলবেন।” বস্তুত, ফোনালাপের অডিয়ো প্রকাশ্যে এনে কুণাল দাবি করেছিলেন, স্বাস্থ্য ভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থানে হামলার ছক কষা হচ্ছে। তিনি বলেছিলেন, “বৃহস্পতিবার জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক সংক্রান্ত প্রক্রিয়া চলার সময় দু’-তিনটে শিবির হামলা করার ছক কষেছিল।” রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিড়ম্বনায় ফেলতেই জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নায় হামলা করার ছক কষা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তৃণমূল নেতা।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার লালবাজারের কাছে ফিয়ার্স লেনে রাত জেগেছেন বাম কর্মী-সমর্থকেরা। সেখানে ছিলেন কলতানও। শনিবার ভোর ৫টা নাগাদ অবস্থানস্থল থেকে কলতানকে বেরিয়ে যেতে দেখেন সিপিএম কর্মীরা। একটি সূত্রের খবর, কলতানের সঙ্গে ছিলেন কলকাতা জেলার অপর এক সিপিএম নেতা সংগ্রাম চট্টোপাধ্যায়। তাঁরা একটি ট্যাক্সি ধরে দক্ষিণ কলকাতার দিকে রওনা হন। টালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে ট্যাক্সি ঘিরে ফেলে পুলিশ। প্রথমে দু’জনকেই আটক করা হয়। পরে সংগ্রামকে ছেড়ে দেওয়া হলেও গ্রেফতার হন কলতান।