ভোগান্তি: মেট্রো বন্ধে নাজেহাল অবস্থা যাত্রীদের। বৃহস্পতিবার, সেন্ট্রাল স্টেশনের সামনে। নিজস্ব চিত্র
চলন্ত মেট্রোর সামনে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যু হল বছর পঞ্চান্নর এক ব্যক্তির। বৃহস্পতিবার সকালে অফিসের ব্যস্ত সময়ে এই ঘটনার জেরে প্রায় ৪০ মিনিট বন্ধ রইল পরিষেবা। শেষে মেট্রো যখন চালু হল, ঠাসাঠাসি ভিড় ও গরমে গলদঘর্ম যাত্রীরা। ভিড়ের এই রেশ চলে প্রায় দেড় ঘণ্টা।
মেট্রো সূত্রের খবর, ওই ব্যক্তির নাম অমিয়কুমার মণ্ডল। বাড়ি বেলঘরিয়ায়। তিনি কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চে অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর ছিলেন। মেট্রো সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ শ্যামবাজার স্টেশনে কবি সুভাষগামী একটি এসি মেট্রোর সামনে আচমকা লাফিয়ে পড়েন অমিয়বাবু। চালক সঙ্গে সঙ্গে আপৎকালীন ব্রেক কষলেও ততক্ষণে মেট্রোর দু’টি কামরা তাঁর শরীরের উপর দিয়ে চলে যায়। যাত্রীদের নামিয়ে ট্রেন পিছিয়ে এনে রক্তাক্ত অমিয়বাবুকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সন্ধ্যায় সেখানেই মারা যান তিনি।
এ দিকে, এই দুর্ঘটনার জেরে নোয়াপাড়া থেকে সেন্ট্রাল পর্যন্ত উত্তর কলকাতার বিস্তীর্ণ পথে সম্পূর্ণ থমকে যায় মেট্রো চলাচল। সে সময়ে কবি সুভাষ থেকে সেন্ট্রালের মধ্যে পরিষেবা চালু ছিল। সওয়া ১০টা নাগাদ নোয়াপাড়া থেকে কবি সুভাষের মধ্যে মেট্রো চলাচল শুরু হলেও দীর্ঘ সময় যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। কাজের দিনে আচমকা এমন ঘটনায় বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়েন অনেকে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হয় দমদম এবং নোয়াপাড়ায়। শহরতলির লোকাল ট্রেন থেকে নামা কয়েক হাজার যাত্রী দমদমে আটকে পড়েন। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের গেট সাময়িক ভাবে বন্ধ করতে হয়। যাত্রীদের কেউ কেউ ভিড়ে ঠাসা মেট্রো থেকে নামতে গিয়ে অল্প-বিস্তর আহত হন বলেও অভিযোগ। কবি সুভাষগামী একটি মেট্রোর এক যাত্রী জানান, রবীন্দ্র সদনে নামার সময়ে ভিড়ের চাপে তাঁর হাতঘড়ি ছিঁড়ে যায়। আর এক যাত্রীর জুতোর চাপে পায়ের আঙুলে আঘাত পান তিনি।
এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দ্রুত ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হলেও শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি। এই ঘটনার জন্য কিছু ক্ষণ পরিষেবা ব্যাহত হয়েছিল। সকাল ১০টার কিছু পরে মেট্রো চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়।’’