প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের স্কুলে ক্লাস করছেন বন্দিরা। মঙ্গলবার। ছবি: কারা দফতরের সৌজন্যে
সরকারি নির্দেশ মেনে স্কুল খুলল কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন সংশোধনাগারেও।
কোভিডের কারণে সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে এত দিন বন্ধ ছিল সেই স্কুলগুলি। তাই বন্দিদের কুঠুরিতে গিয়ে শিক্ষকেরাই তাঁদের লেখাপড়া করাতেন। ওই শিক্ষকেরাও অবশ্য বন্দি। কারা দফতর জানাচ্ছে, মঙ্গলবার থেকে ফের বন্দিরা শ্রেণিকক্ষে বসে লেখাপড়া করবেন। সাধারণ নাগরিকের মতোই সংশোধনাগারে লেখাপড়া, সংস্কৃতি চর্চা-সহ বিভিন্ন কাজকর্মে যুক্ত থাকেন বন্দিরা। কিন্তু সবটাই প্রাচীরের ও-পারে, ওঁদের নিজেদের জগতে সীমাবদ্ধ।
কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলের সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, সেখানে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি এবং স্নাতক স্তর মিলিয়ে সব বয়সের ২৫ জন পড়ুয়া রয়েছেন। লেখাপড়া শেখান পাঁচ শিক্ষক। সুপার বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশিকা মেনে এ দিন স্কুল খোলা হয়েছে। তবে বন্দিরা করোনা কালেও লেখাপড়ার মধ্যেই ছিলেন। মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরে তাঁরা অনলাইনে প্রজেক্ট জমা দিয়েছেন।’’
এ দিন বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা এবং বিকেল ৩টে থেকে ৫টা পর্যন্ত দু’দফায় বন্দিদের ক্লাস হয় প্রেসিডেন্সি জেলে। আপাতত সেই সময় ধরেই ওই স্কুল চলবে বলে কারা দফতর সূত্রের খবর। পাচার, জালিয়াতি, বধূ নির্যাতন, মাদক চক্রে জড়িত থাকা-সহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত বন্দিরা রয়েছেন পড়ুয়াদের দলে। কারা দফতরের দাবি, অনেকে লেখাপড়া খানিকটা জানেন। তাঁরা উঁচু ক্লাসে পড়ছেন। ইতিহাস, অর্থনীতি, বিজ্ঞান-সহ বিভিন্ন বিষয়ের পড়ুয়া বন্দি রয়েছেন প্রেসিডেন্সি জেলে।
এত ধরনের বিষয়ের ভাগাভাগি না থাকলেও বারুইপুর সংশোধনাগারের কিছু বন্দি লেখাপড়া করেন। সেখানে মূলত শিক্ষা ও উচ্চ শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান প্রকল্পের আওতায় বন্দিদের শিক্ষিত করে তোলার চেষ্টা হয়। করোনার সময়ে সেই সব প্রকল্প বন্ধ ছিল বলে কারা দফতর সূত্রের খবর। এ দিন সেই সব প্রকল্পের ক্লাসও চালু হয়েছে ওই সংশোধনাগারে। এক আধিকারিক জানান, আলিপুর থেকে স্থানান্তরের পরে বারুইপুরে এখন আর উচ্চশিক্ষিত বন্দি কেউ নেই। আলিপুরে যাঁরা ছিলেন, সবাই বিভিন্ন জেলে বদলি হয়ে গিয়েছেন।
রাজ্য কারা দফতরের এডিজি পীযূষ পাণ্ডে বলেন, ‘‘করোনার কারণে স্কুল বন্ধ রাখতে হয়েছিল। সব ক’টি সংশোধনাগারেই এ দিন থেকে স্কুল চালু হয়ে গিয়েছে। বোর্ডের পরীক্ষার জন্যও অনেকে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ফলে স্কুল চালু হওয়ায় বন্দিদের সুবিধা হবে।’’