পড়ুয়াদের হাতে মাদক আটকাতে তৎপর পুলিশ

দীর্ঘদিন ধরেই শহরের স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের কাছে অনায়াসেই মাদক পৌছে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। পড়ুয়াদের মধ্যে অবাধে মাদকের কারবার গত বছরেই প্রকাশ্যে আসে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৯ ০২:০৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

শহরের স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের কাছে যাতে মাদক না পৌছয় তার জন্য কঠোর হল লালবাজার। ওই মাদকচক্র ঠেকাতে গোয়েন্দা বাহিনীকে আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা।

Advertisement

দীর্ঘদিন ধরেই শহরের স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের কাছে অনায়াসেই মাদক পৌছে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। পড়ুয়াদের মধ্যে অবাধে মাদকের কারবার গত বছরেই প্রকাশ্যে আসে। বছর খানেক ধরে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো এবং লালবাজারের মাদক দমন শাখা একাধিক বার মাদক পাচারে যুক্ত ছাত্র-সহ একাধিক পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে। যারা পড়ুয়াদের কাছে ওই মাদক পৌছে দিত। গত বছরেই কেন্দ্রীয় সংস্থা নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর অফিসারেরা অভিযান চালিয়ে বিধাননগর এবং কলকাতার স্কুল-কলেজের বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছিল। পুলিশ জানতে পারে, প্রধানত ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ম্যানেজমেন্ট কলেজগুলিতে মাদকের অবৈধ কারবার জাঁকিয়ে বসেছে। এর পরে লালবাজারের গোয়েন্দারাও শহরের বিভিন্ন কলেজের মাদক চক্রের সন্ধান পান। কয়েক জনকে গ্রেফতারও করা হয়। কিন্তু তাতেও পড়ুয়াদের কাছে মাদক পৌছনো থামেনি তা মানছে পুলিশও।

লালবাজার সূত্রের খবর, পুলিশ কমিশনার মাদক দমন শাখার গোয়েন্দা-আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই বৈঠকে পুলিশ কমিশনার পরিষ্কার ভাবে বলে দিয়েছেন, মাদক পাচার দমনে গোয়েন্দাদের কোন রকম গাফিলতি তিনি বরদাস্ত করবেন না।’’ লালবাজার জানিয়েছে, পুলিশ কমিশনার মাদক পাচার চক্রের ক্যারিয়ার এবং এজেন্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে ওই মাদক কোন ভাবেই ছাত্রছাত্রীদের কাছে না পৌছয়।

Advertisement

লালবাজার জানিয়েছে, শুক্রবার এবং শনিবার পর পর দু’দিন পড়ুয়াদের কাছে মাদক পৌছে দেওয়ার অভিযোগে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার পার্ক সার্কাস এলাকার বিভিন্ন বেসরকারী স্কুলের পড়ুয়াদের হাতে ব্রাউন সুগার পাচারের অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করেন গোয়েন্দারা। শনিবার রাতেও যাদবপুর থেকে গাঁজা-সহ দু’ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, তারা ওই এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়াদের কাছে ওই মাদক পৌছে দিত।

তদন্তকারীরা জানান, দক্ষিণ শহরতলির বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়াদের মধ্যে মাদকের প্রতি ঝোঁক বেশি। তা বুঝে ওই এলাকায় পাচারচক্র ভাঙতে তৎপর পুলিশও। সেই মতো তাঁরা খবর পান আসগর মিস্ত্রি এবং আবাসউদ্দিন লষ্কর নামে দুই মাদক পাচারকারী শনিবার রাতে ওই এলাকার পড়ুয়াদের কাছে

গাঁজা পৌছে দেবে। এর পরেই ওই রাতে সেখানে হানা দেন তদন্তকারীরা। পড়ুয়াদের কাছে মাদক তুলে দেওয়ার আগেই গোয়েন্দারা গ্রেফতার করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের বাসিন্দা ওই দুই মাদক পাচারকারীকে। তাদের কাছ থেকে প্রায় ৪ কেজি ৩০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃতেরা গোয়েন্দাদের জেরার মুখে

জানিয়েছে, যাদবপুর, গড়িয়া, ইমএম বাইপাস-সহ আশেপাশে অবস্থিত একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পড়ুয়া ছিল ওই দুই ব্যক্তির ক্রেতা। বিগত তিন-চার মাস ধরে ওই দু’জনে পড়ুয়াদের মাদক বিক্রি করছে বলে গোয়েন্দাদের দাবি।

শুক্রবারই লালবাজারের গোয়েন্দারা আসগর হোসেন এবং আরশাদ হোসেন নামে পার্কসার্কাসের বাসিন্দা দুই পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছিল। ধৃতদের থেকে ৫০ গ্রাম ব্রাউনসুগার উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement