প্রতীকী ছবি।
ভাস্কর্যের উচ্চতা দেড় ফুট। লম্বায় আট ইঞ্চি। পোড়া মাটির মতো দেখতে এই ভাস্কর্যে হাতে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে দেখা যাচ্ছে দুই নর্তকীকে। শিল্পকর্মটির নীচে লেখা রয়েছে, ১৯ শতকের এই ভাস্কর্য মিলেছে বীরভূম থেকে। সেই সঙ্গে উল্লেখ রয়েছে ভারতীয় জাদুঘরেরও।
মন্দির চত্বরে প্রায় দেড় মাস ধরে পড়ে থাকা এই ভাস্কর্য ঘিরেই সোমবার শোরগোল পড়ে গেল সল্টলেকে। পুরনো এবং দুর্মূল্য একটি ভাস্কর্য কী ভাবে ওই এলাকায় এল, তা নিয়েও জল্পনা চলে দিনভর। খবর পেয়ে বিধাননগর পুলিশ এসে ভাস্কর্যটি উদ্ধার করে। পরে অবশ্য জানা যায়, সেটি নকল। জাদুঘরের মডেলিং দফতর ওই ধরনের বেশ কিছু ভাস্কর্য তৈরি করে বিক্রি করে। এটি তারই একটি। দাম ৩৪৫ টাকা মাত্র!
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার সকালে। সল্টলেকের ফাঁড়ি বাসস্টপের কাছে একটি রিকশাস্ট্যান্ডের সামনে একটি মন্দিরে ভাস্কর্যটি রাখা ছিল। এ দিন স্থানীয়েরা খেয়াল করেন, ভাস্কর্যটির নীচে জাদুঘরের নাম লেখা আছে। খবর যায় পুলিশে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, স্থানীয় রিকশাচালকেরা সেটি রাস্তার পাশ থেকে কুড়িয়ে পেয়ে ওই মন্দিরে রেখে দিয়েছিলেন। মন্দিরে অনেকে পুজোও করতেন ভাস্কর্যটিকে। তবে তার নীচে যে কিছু লেখা রয়েছে, তা কেউ এত দিন খেয়াল করেননি। এ দিন ভাস্কর্যটি পুলিশ উদ্ধার করতে শুরু হয় জল্পনা। কারও মতে, কয়েক বছর আগে এলাকায় এক মূর্তি-চোর ধরা পড়েছিল। এটি হয়তো তারই কীর্তি। ভাস্কর্যটি আসল হলে এত দিন ধরে তা মন্দিরে পড়ে থাকত কি না, সেই প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান ছিল, ভাস্কর্যটি নকল। তবু সেটি উদ্ধার করে ভারতীয় জাদুঘরের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা। তখনই জানা যায়, পুলিশের অনুমান ঠিক। জাদুঘরের অধিকর্তা অরিজিৎ দত্ত চৌধুরী এ দিন জানিয়েছেন, ভাস্কর্যটি আসল নয়। জাদুঘরের মডেলিং দফতর এমন নকল ভাস্কর্য তৈরি করে বিক্রি করে। সেখান থেকেই কেনা ভাস্কর্যটি হয়তো কোনও ভাবে রাস্তার পাশে পড়ে গিয়েছিল। জাদুঘর সূত্রের খবর, সেখানে আসা দর্শকদের মধ্যে এই নকল ভাস্কর্য কেনার চাহিদা রয়েছে।