—প্রতীকী চিত্র।
ফের একটি বুজিয়ে দেওয়া জলাভূমিকে পূর্বাবস্থায় ফেরানো হচ্ছে বিধাননগরে। অভিযোগ, পুজোর সময়ে সরকারি ছুটি চলাকালীন ওই জলাভূমিটি ভরাট করে দেওয়া হয়েছিল। ঘটনাটি স্থানীয়দের নজরে আসতে তাঁরা বিধাননগর পুরসভাকে জানান। এর পরে বিভিন্ন আইনি পদক্ষেপ করে জলাভূমিটি উদ্ধার করা হয়। বুধবার থেকে সেটিকে পূর্বাবস্থায় ফেরানোর কাজ শুরু হয়েছে।
বিধাননগর পুর এলাকায় পুকুর ভরাটের ঘটনা নতুন নয়। একাধিক বার এমন ভাবে ভরাট হওয়া জলাভূমি বা পুকুর উদ্ধার করে সেটিকে ফের খুঁড়ে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরসভার পরিবেশ দফতরের মেয়র পারিষদ রহিমা বিবি জানান, যত দ্রুত সম্ভব ওই পুকুরটিতে জল ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, ‘‘পুজোর ছুটির সময়ে পুকুরটি ভরাট করার চেষ্টা হয়েছিল। আমাদের কাজে খবর আসতেই আইনি পদক্ষেপ করা হয়। আমরা বার বারই পুকুর বা জলাভূমির উপকারিতা নিয়ে প্রচার চালাই। দুর্ভাগ্য, এখনও কিছু মানুষ তা বুঝতে চান না।’’
স্থানীয় ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি প্রবীর সর্দার জানান, পুকুরটি একটি ব্যক্তিগত জমির অন্তর্গত। একটি স্কুলের পিছন দিকে রয়েছে সেটি। প্রবীর বলেন, ‘‘কারা পুকুর ভরাট করছিল, পুরসভাকে তা জানানো হয়েছে। আশা করা যায়, পুরসভা তাঁদের নোটিস পাঠাবে।’’ উল্লেখ্য, বিধাননগর পুর এলাকায় এই নিয়ে চার থেকে পাঁচটি পুকুর এ ভাবে ভরাট হওয়ার পরে ফের নতুন করে খোঁড়া হল। কিন্তু প্রতি বার পুরসভা ভরাট হয়ে যাওয়া পুকুরকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিলেও যাঁরা সেই বেআইনি কাজটি করার চেষ্টা করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তেমন কোনও ব্যবস্থা নেয় না বলে অভিযোগ। তাই যেখানে জলাভূমি ভরাট কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ, সেখানে পুরসভার আরও কড়া পদক্ষেপের প্রয়োজন আছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
রহিমা বলেন, ‘‘অতীতে তদন্ত করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, স্থানীয়েরা পুকুর ভরাটের কথা জানালেও যাঁরা ঘটনায় জড়িত, তাঁদের নাম জানাতে ভয় পান। যে কারণে এখনও পর্যন্ত প্রশাসন কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। যাঁরা পুকুরে মাটি ফেলেন, তাঁরা তো আসলে দোষী নন। যাঁরা মাটি ফেলাচ্ছেন, তাঁদেরই ধরা উচিত।’’
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বিধাননগর কমিশনারেটের আধিকারিকেরা জানান, পুলিশের কাছে অভিযোগ এলে অবশ্যই ঘটনার তদন্ত করা হয়। থানার কাছে পুকুর ভরাট হওয়ার অভিযোগও আসে। কিন্তু কে বা কারা সেই কাজ করাচ্ছেন, তা জানানো হয় না। পুর আধিকারিকেরা জানান, এর আগে রহিমার ওয়ার্ডেই পুকুর ভরাটের চেষ্টা হয়েছিল। সেই পুকুর পুনরায় কেটে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মূল সল্টলেকে এমন সমস্যা না থাকলেও বিধাননগরের রাজারহাট এলাকায় এখনও বহু জলাভূমি ও পুকুর রয়েছে। সেগুলি যাতে অক্ষত থাকে, সে দিকে পুরসভার নজর রয়েছে বলে জানাচ্ছেন রহিমা।