গ্রামবাসীদের বিক্ষোভে ফিরে যাচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
গ্রামবাসীর ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে কবর থেকে আনিস খানের দেহ না নিয়েই ফিরে যেতে হল পুলিশকে। শনিবার কাকভোরে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য আনিসের দেহ আনতে গ্রামে যায় পুলিশ। নিয়ম অনুযায়ী, পরিবারের তরফে আনিসের বাবা বা অন্য কোনও সদস্যের সেখানে উপস্থিত থাকার কথা। সেখানে ছিলেন স্থানীয় বিডিও এবং বিএমওএইচ। কবর থেকে দেহ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া তখনও শুরু হয়নি। মাইকিং করে জানানো হয়, আনিসের দেহ তোলা হবে। তার পরেই আসে গ্রামবাসীদের বাধা। আনিসের আত্মীয়-প্রতিবেশী এবং গ্রামবাসীরা জমায়েত হয়ে অভিযোগ করেন, আগে আনিসের বাবার সঙ্গে কথা হয়েছে পুলিশের। তারা সোমবার দেহ নিয়ে যাবার কথা জানিয়েছে। তা হলে শনিবার কাকভোরে কেন পুলিশ এল? সিটের প্রতিনিধিরাই বা কোথায়, কার নির্দেশে এই পদক্ষেপ---এমন কিছু প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। এ নিয়ে তাঁরা রীতিমতো বিক্ষোভ শুরু করেন। বিডিও-কে ঘিরে ধরে প্রশ্ন করতে থাকেন তাঁরা। তার পরও বেশ কিছু ক্ষণ সেখানে অপেক্ষা করেন পুলিশ ও সরকারি আধিকারিকরা। কিন্তু গ্রামবাসীরা ছিলেন অনড়। শেষমেশ দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য দেহ না তুলেই ফিরে যান পুলিশ ও সরকারি আধিকারিকরা। উল্লেখ্য, উত্তর ২৪ পরগনার জেলা আদালতের বিচারক বা তাঁর প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা খুনের মামলায় দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। নির্দেশে জানানো হয়, জেলা বিচারকের উপস্থিতিতে এই ময়নাতদন্ত করতে হবে। পাশাপাশি, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের একটি করে প্রতিলিপি আনিসের পরিবার এবং মামলাকারীকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে মামলাকারীদের সিবিআই দিয়ে তদন্তের আবেদন খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট।
অন্য দিকে, শুক্রবার আনিসের বাবা ও তাঁর পরিবার হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে আইনজীবীর সঙ্গে টিআই প্যারেডে যান। যদিও আনিসের বাবা আগেই দাবি করেছেন, যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের তিনি স্পষ্ট চিনতে পারেননি। তিনি একজন বন্দুকধারী পুলিশকে দেখেছিলেন। তাঁকে দেখলে তিনি চিনতে পারবেন। পাশাপাশি, তদন্তের স্বার্থে শুক্রবার আনিসের মোবাইল ফোনটি তিনি জমা দেন।