এই ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয় অর্পিতাদেবীর দেহ। নিজস্ব চিত্র
আবাসনের ঘর থেকে মঙ্গলবার উদ্ধার হল এক বৃদ্ধার দেহ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম অর্পিতা বন্দ্যোপাধ্যায় (৭২)। তিনি গল্ফগ্রিনের একটি আবাসনে একাই থাকতেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃদ্ধার একমাত্র মেয়ে আমেরিকায় থাকেন। মঙ্গলবার বিকেল থেকে মাকে এক নাগাড়ে ফোন করেও যোগাযোগ করতে পারেননি তিনি। পরে ওই আবাসনের অন্য এক বাসিন্দাকে মায়ের খোঁজ নিতে বলেন। দোতলার সেই বাসিন্দা পাঁচতলায় গিয়ে বৃদ্ধার দরজায় বারবার বেল বাজালেও কোনও সাড়া পাননি। তখন তিনি আবাসনের অন্য বাসিন্দাদের খবর দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন স্থানীয় কাউন্সিলর তপন দাশগুপ্ত। যাদবপুর থানায়
খবর দেওয়া হলে পুলিশ গিয়ে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে মেঝেয় অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকা অপির্তাদেবীকে উদ্ধার করে। তাঁকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে তিনি রক্তচাপজনিত অসুখে ভুগছিলেন। পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা তপনকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘খুব ভাল মানুষ ছিলেন। দিন দু’য়েক আগেই ওঁর সঙ্গে কথা হয়েছিল। বলেছিলেন, শরীরটা ভাল যাচ্ছে না।’’ তদন্তকারীদের অনুমান, সম্ভবত সোমবার রাতেই হৃদ্যন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধার। ডিসি (এসএসডি) সুদীপ সরকার বলেন, ‘‘মৃতদেহ ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। বৃদ্ধা দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। তবে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
মৃতার স্বামী প্রয়াত সজল বন্দ্যোপাধ্যায় সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তাঁর ফ্ল্যাটে কোনও পরিচারিকা ছিলেন না। নিজেই রান্নাবান্না করতেন বৃদ্ধা।
এ দিকে, বৃদ্ধার এ ভাবে মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ওই আবাসনে। স্থানীয় কাউন্সিলর তপনবাবু বলেন, ‘‘গল্ফগ্রিনের আবাসনে বেশির ভাগ প্রবীণই একা থাকেন। তাঁদের নিয়মিত খোঁজখবর রাখার জন্য সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করতে কলকাতা পুলিশের কাছে আবেদন জানাব।’’ এই প্রস্তাব শুনে ডিসি (এসএসডি) বলেন, ‘‘প্রস্তাবটি ভাল। সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে যাতে আবাসনের বয়স্কদের নিয়মিত খোঁজ নেওয়া যায়, সেই ব্যবস্থা করা হবে।’’