মানস সরকার।
ছোটদের খেলা ঘিরে বচসার সূত্রপাত হয়েছিল। যা পরে হাতাহাতিতে গড়ায়। তারই প্রতিবাদ করে বিষয়টি থামাতে গিয়ে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম মানস সরকার (৫৫)। পরিবারের অভিযোগ, পিটিয়ে মারা হয়েছে তাঁকে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার বিকেলে, আলিপুর থানা এলাকার গোপালনগরের আফতাব মসজিদ লেনে। শনিবার সকালে পরিবারের তরফে আলিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্ত শুরু হয়েছে।
ওই এলাকারই বাসিন্দা মানসবাবু পেশায় ছিলেন ব্যবসায়ী। বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী ও ছেলে। বছর সতেরোর ছেলে অর্কপ্রভ সরকার এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। স্থানীয় সূত্রের খবর, অন্যান্য দিনের মতো শুক্রবারও বাড়ির পাশের রাস্তায় ক্রিকেট খেলছিল ছোটরা। সেখানে খেলছিল অর্কপ্রভও। খেলা চলাকালীন কোনও বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে গোলমাল হয় বলে বাসিন্দাদের দাবি। তার জেরেই এলাকার কয়েক জন যুবক অর্কপ্রভকে মারধর করে বলে অভিযোগ। এমনকি, তাকে জুতো দিয়ে মারা হয়েছিল বলেও দাবি করেছে পরিবার।
চিৎকার শুনে মানসবাবু ঘটনাস্থলে গিয়ে ছেলেকে মারধরের প্রতিবাদ করেন। তখন মানসবাবুর সঙ্গেও ওই যুবকদের বচসা শুরু হয়। তারই মধ্যে আচমকা কয়েক জন যুবক ওই প্রৌঢ়কে ধাক্কা দেয় বলে অভিযোগ। তখনই রাস্তায় পড়ে যান তিনি। নাক দিয়ে রক্ত বেরোতে থাকে বলে জানান স্থানীয়েরা। দ্রুত এসএসকেএমে নিয়ে গেলেও মৃত ঘোষণা করা হয়।
পরিবারের অভিযোগ, মারধরের ফলেই মৃত্যু হয়েছে মানসবাবুর। শনিবার সকালে স্থানীয় কয়েক জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতের পরিবার। এক আত্মীয় অনির্বাণ বক্সী বলেন, ‘‘বচসা ঠেকাতেই মানসবাবু ওখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু কয়েক জন তাঁকে কিল, চড়, ঘুষি মারতে থাকে। তখনই পড়ে গিয়ে নাক দিয়ে রক্ত বেরোতে থাকে ওঁর।’’ মানসবাবুর স্ত্রী জ্যোৎস্না সরকার বলেন, ‘‘ছেলেকে জুতো দিয়ে মেরেছিল ওরা। সে সব শুনেই আমার স্বামী ঝামেলা থামাতে গিয়েছিলেন। সেখানেই ওরা ওঁকে মারধর করল।’’
এ দিন ময়না-তদন্তের পরে দেহ তুলে দেওয়া হয়েছে পরিবারের হাতে। এক তদন্তকারী বলেন, ‘‘ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে মারধরের ফলে মৃত্যুর কোনও প্রমাণ মেলেনি। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে আরও তদন্ত করা হবে।’’ তদন্ত শুরুর পরে এ দিন ঘটনাস্থলে যায় আলিপুর থানার পুলিশ। অভিযুক্তেরা পলাতক বলে জানা গিয়েছে। দোষীদের শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন স্থানীয়েরাও।