Ama Dablam

কোভিড-ভয় ভেঙে আমা দাবলাম অভিযানে চার বাঙালি

কোভিডের কারণে চলতি বছরের শুরুর দিকে অভিযাত্রীদের জন্য পাহাড়ের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল নেপাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২০ ০১:৫০
Share:

অদম্য: (বাঁ দিক থেকে) দেবাশিস, কিরণ, মলয় ও সত্যরূপ। রবিবার, কলকাতা স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র

অভিযান শুরুর আগেই বাধা কিছু কম ছিল না। কখনও কোভিডের হানায় পুরো পাহাড়ি অঞ্চলে অভিযান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন, কখনও আবার ভারত-নেপাল আন্তর্জাতিক উড়ান ফের শুরু হওয়ার দিন পিছিয়ে গিয়েছে। কোভিডের কারণে অভিযানের অনুমোদন (পারমিট) পাওয়া নিয়েও ছিল সংশয়। তবু দমানো যায়নি চার বাঙালি পর্বতারোহীকে। কোভিডের চোখ রাঙানিকে কার্যত উপেক্ষা করে আমা দাবলাম (৬৮১২ মিটার) শৃঙ্গ অভিযানের জন্য রবিবারই কাঠমান্ডুর উদ্দেশে রওনা দিলেন চার পর্বতারোহী দেবাশিস বিশ্বাস, মলয় মুখোপাধ্যায়, সত্যরূপ সিদ্ধান্ত এবং কিরণ পাত্র।

Advertisement

কোভিডের কারণে চলতি বছরের শুরুর দিকে অভিযাত্রীদের জন্য পাহাড়ের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল নেপাল। একই পথে হেঁটেছিল চিনও। ফলে বাতিল হয়ে গিয়েছিল বহু অভিযানের পরিকল্পনা। দীর্ঘ ছ’মাস বন্ধ থাকার পরে গত সেপ্টেম্বর থেকে বাছাই করা কয়েকটি শৃঙ্গের জন্য অনুমোদন দিতে শুরু করেছে নেপাল। তার পরেই এ বছর বাংলা থেকে প্রথম কোনও পর্বতারোহী দল অভিযানে যাচ্ছে।

কিন্তু অভিযানের জন্য ‘হিমালয়ের ম্যাটারহর্ন’ আমা দাবলাম শৃঙ্গ কেন? দেবাশিস বলছেন, ‘‘২০২০ সাল আমার এভারেস্ট অভিযানের ১০ বছর। সেই উপলক্ষে চিনের দিক থেকে এভারেস্ট যাওয়ার কথা ছিল। কোভিডের জন্য ভেস্তে যায়। এ বছরের জন্য মলয়ের সঙ্গে আগেই ছোট-বড় পরিকল্পনা করা ছিল। সে সব কিছুই প্রায় হয়নি। সম্প্রতি নেপাল এই শৃঙ্গের পথ খুলে দেওয়ায় সকলে মিলে এখানেই যাব ঠিক করি।’’

Advertisement

কোভিড পরিস্থিতিতে এই অভিযান শুরুর পথটা অবশ্য মসৃণ ছিল না। বরং পদে পদে বাধা এসেছে। কখনও নামচেবাজারে কোভিড-হানার কারণে গোটা খুম্বু অঞ্চল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, কখনও নেপাল পৌঁছনোর রাস্তা বন্ধ রয়েছে। কাঠমান্ডু যাওয়ার বিমানের টিকিট কাটার পরে জানা গিয়েছে যে, সংক্রমণ এড়াতে ভারত-নেপাল আন্তর্জাতিক উড়ান চলাচল ফের পিছিয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বেশি অভিযাত্রী না থাকলে রুট না খোলার আশঙ্কা তো ছিলই। অতিমারি পরিস্থিতিতে অভিযানের খরচ জোগানোটাও ছিল বড় মাথাব্যথার কারণ।

সব বাধা কাটিয়ে তাই এ বার স্থলপথেই নেপাল পৌঁছনোর কথা ভেবেছেন বলে জানাচ্ছেন মলয়। কলকাতা থেকে ট্রেনে শিলিগুড়ি, সেখানে থেকে গাড়িতে কাঁকড়ভিটা হয়ে কাঠমান্ডু পৌঁছনো। সেখানে পাঁচ দিনের কোয়রান্টিন পর্ব সেরে লুকলা হয়ে আমা দাবলামের বেসক্যাম্প। পাহাড়ি পথে এ বার আইস-অ্যাক্স, ক্র্যাম্পনের সঙ্গে নতুন সঙ্গী থাকছে মাস্ক এবং স্যানিটাইজ়ার।

কিন্তু কোভিড-আতঙ্কের মধ্যে এই অভিযান কি তাড়াহুড়ো হল না? সপ্তশৃঙ্গজয়ী সত্যরূপ বলছেন, ‘‘কোভিডকে নিয়েই চলতে হবে আমাদের, এটাই বাস্তব। তার মধ্যেই ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছি। করোনার ভয়কে জয় করে যে পাহাড় অভিযানও সম্ভব, সেটাই করে দেখাতে চাই আমরা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement