আরজি কর-কাণ্ডে মিছিলে শামিল প্রয়াত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্কুলের প্রাক্তনীরা। — নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে পথে নামলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্কুলের প্রাক্তনীরা। প্রতিবাদীদের চিঠি লিখে সমর্থন করলেন সেই স্কুলেরই আর এক প্রাক্তনী, রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল শ্যামল সেন। শনিবার শ্যামপুকুরের শৈলেন্দ্র সরকার বিদ্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল শুরু করেন প্রাক্তনীরা। শেষ হয় স্টার থিয়েটারের সামনে।
শনিবার আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে মিছিল করেন হেয়ার স্কুল, হিন্দু স্কুল, সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুল এবং সংস্কৃত কলেজের প্রাক্তনীরাও। হাজার খানেক মানুষের এই মিছিল শুরু হয় কলেজ স্কোয়্যারের সামনে থেকে। শেষ হয় শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে। জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার পর শেষ হয় মিছিল। স্কুলের প্রাক্তনীদের দাবি, নির্যাতিতা সুবিচার না পেলে আবার এই ধরনের কর্মসূচিতে যোগ দেবেন তাঁরা।
আরজি কর-কাণ্ডে মিছিলে শামিল হিন্দু স্কুলের প্রাক্তনীরা। — নিজস্ব চিত্র।
শৈলেন্দ্র সরকার বিদ্যালয়ের প্রাক্তনীদের মিছিল প্রথমে শ্যামবাজার পর্যন্ত যাওয়ার কথা ছিল। শুক্রবার রাতে উদ্যোক্তাদের তরফে বলা হয়, পুলিশ শ্যামবাজারের পরিবর্তে হেঁদুয়ার দিকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে। সেই মতো তাঁরা স্টার থিয়েটারের সামনে মিছিল শেষ করবেন তাঁরা। শনিবার তা-ই করা হল। উদ্যোক্তাদের তরফে আগেই জানানো হয়েছে, এই মিছিলের নেপথ্যে কোনও রাজনৈতিক দল নেই। বুদ্ধদেবের স্মরণসভার সঙ্গেও কোনও সম্পর্ক নেই। প্রতিবাদ মিছিলের অন্যতম উদ্যোক্তা দেবজ্যোতি কর তা স্পষ্ট করে জানিয়েও দেন। অতি-উৎসাহী কেউ কেউ এমনও বলেছিলেন, মিছিলে স্লোগান উঠুক ‘এ লড়াই বাঁচার লড়াই, এ লড়াই জিততে হবে’। ২০১৫ সালে ব্রিগেডে সিপিএমের সমাবেশে যে স্লোগান শোনা গিয়েছিল বুদ্ধদেবের গলায়। বৃহস্পতিবার সেই স্লোগান দিয়েই দলকে বাঁধতে চেয়েছিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। কিন্তু উদ্যোক্তাদের তরফে সেই স্লোগানে স্পষ্ট ‘না’ করে দেওয়া হয়। শনিবার হাতে প্ল্যাকার্ড এবং পোস্টার নিয়েই মিছিল করলেন প্রাক্তনীরা। সেখানে নির্যাতিতার জন্য ন্যায়বিচারের দাবি তোলা হয়েছে। প্রাক্তনীদের মুখেও ছিল সেই স্লোগান। এক জনের হাতে দেখা যায় জাতীয় পতাকাও।
মূলত ২০০৮ সালে মাধ্যমিক পাশ করেছিলেন যে ছাত্ররা, তাঁরাই এই মিছিলের উদ্যোক্তা। পরে তা অন্যদের মধ্যেও ছড়িয়ে যায়। শুক্রবার উদ্যোক্তাদের তরফে স্কুলের বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছেও অনুরোধ করা হয়েছে, মিছিলে পা মেলানোর জন্য। উদ্যোক্তাদের এ-ও বক্তব্য, পারিপার্শ্বিক কারণে অনেকের ইচ্ছে থাকলেও মিছিলে যোগ দেওয়ার উপায় নেই।