ধূলিসাৎ: ভেঙে পড়েছে বাড়ির একাংশ। রবিবার, বুদ্ধু ওস্তাগর লেনে। ছবি: সুমন বল্লভ
খদ্দের সামলে কয়েক মিনিটের জন্য বাইরে এসেছিলেন দোকানদার। রাস্তায় দাঁড়াতেই শোনেন বিকট একটা আওয়াজ। পিছন ফিরে তিনি দেখলেন, যে বাড়িটির নীচে তাঁর দোকান, সেই বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়েছে। আর তাঁর দোকান মিশে গিয়েছে মাটিতে। রবিবার সাতসকালে এই ঘটনা ঘটেছে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা এলাকার বুদ্ধু ওস্তাগর লেনে। তবে ছুটির দিন হওয়ায় এবং বাড়ির উপরের তলার বাসিন্দারা না থাকায় বড় অঘটন এড়ানো গিয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়েরা।
বুদ্ধু ওস্তাগর লেন এবং অ্যান্টনিবাগান লেনের সংযোগস্থলে থাকা ওই দোতলা বাড়িটি প্রায় ১০০ বছরের পুরনো। নীচের তলায় মুদির দোকান চালান গৌতম কুণ্ডু নামে এক ব্যক্তি। উপরের তলে পরিবার নিয়ে থাকেন বিজয় রায়। শনিবার বিজয়বাবু সপরিবার মালদহে মায়ের কাছে গিয়েছিলেন। ফলে দোতলা বাড়ির পিছনের দিকে ভাড়াটে থাকলেও ভেঙে পড়া অংশটি ফাঁকাই ছিল।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সওয়া সাতটা নাগাদ আচমকা দোতলার বারান্দার প্রায় দশ ফুট অংশ ভেঙে পড়ে। সেই সময়ে কিছু ক্ষণের জন্য দোকান ছেড়ে বেরিয়েছিলেন গৌতম। ঘটনার আকস্মিকতায় হকচকিয়ে যান তিনি। গৌতম বলেন, ‘‘রোজ সকাল ছ’টায় দোকান খুলি। এ দিনও সময় মতো চলে এসেছিলাম। সকালে কয়েক জন কেনাকাটা করতে এসেছিলেন। খদ্দেরের ভিড় কমে যাওয়ায় বেরিয়েছিলাম। সেই সময়েই ভেঙে পড়ে উপরের ছাদের একাংশ। দোকানের জিনিসপত্র থেকে টাকা, কিছুই অবশিষ্ট নেই।’’
খবর পেয়ে আসে পুলিশ। আসেন পুরকর্মীরাও। তাঁরা ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরু করেন। এক পুরকর্মী বলেন, ‘‘কোনও ভাবে জল ঢুকে বাড়ির দেওয়াল দুর্বল হয়ে গিয়েছিল বলে মনে হচ্ছে।’’ স্থানীয় এক বাসিন্দা লক্ষ্মণ সাহা বলেন, ‘‘ওই সময়ে ছাদে ছিলাম। বিকট আওয়াজ শুনে নেমে দেখি, বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়েছে। প্রতিদিন এই দোকানে অনেকে কেনাকাটা করতে আসেন। বড় বিপদের হাত থেকে বেঁচেছি।’’ বাড়ি ভাঙার খবর পেয়ে সকালেই ঘটনাস্থলে আসেন কলকাতা পুরসভার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সোমা চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘বাড়িটি পুরনো ছিল ঠিকই, কিন্তু আমপানের পরে ওয়ার্ডের পুরনো বাড়িগুলি পরীক্ষার সময়ে সব ঠিক থাকায় একে বিপজ্জনক বাড়ি হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি।’’ এ বার সেই সমীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দারা। আজ, সোমবার পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে বলে জানিয়েছেন কাউন্সিলর।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।