কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরে প্রথম সিমেস্টারের বাণিজ্য শাখার পরীক্ষায়প্রশ্ন ফাঁস এবং গণ টোকাটুকির অভিযোগ উঠেছে। প্রতীকী ছবি।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরে প্রথম সিমেস্টারের বাণিজ্য শাখার পরীক্ষায়প্রশ্ন ফাঁস এবং গণ টোকাটুকির অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ দেখায় ছাত্র সংগঠন ডিএসও।
অভিযোগ, পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যে পরীক্ষার্থীদের কাছে প্রশ্নপত্র-সহ উত্তর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চলে এসেছে। মূলত ‘টেলিগ্রাম’ অ্যাপের দু’টি বিশেষ গ্রুপ থেকে এই সব পাওয়া গিয়েছে। এই অভিযোগও উঠেছে যে, কলেজে কলেজে পরীক্ষার্থীরা মোবাইল সঙ্গে এনে পরীক্ষায় বসে এর সুযোগ নিয়েছেন।
মঙ্গলবারও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে বলে অভিযোগ। এ দিন ডিএসও-র পক্ষ থেকে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য আশিস চট্টোপাধ্যায়কে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। ডিএসও-র কলকাতা জেলা সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ‘‘পরীক্ষা শুরুর পর থেকে এ দিনও বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে বাণিজ্য শাখার প্রশ্ন ঘুরেছে। একাধিক টেলিগ্রাম গ্রুপ, যেখানে হাজার হাজার সদস্য রয়েছেন, সেখান থেকে প্রশ্ন-সহ উত্তর ছড়িয়ে পড়েছে। এ ভাবে প্রায় গণ টোকাটুকির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় যদি এত অস্বচ্ছতা এবং প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটে, তা উদ্বেগের। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি চাই। ভবিষ্যতে এমন যাতে না ঘটে, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য আশিস চট্টোপাধ্যায় সোমবার বলেছিলেন, ‘‘এই বিষয়ে আমার কাছে অফিসিয়ালি কেউ কোনও অভিযোগ জানাননি।’’ তবে মঙ্গলবার তিনি জানান, এ দিন পরীক্ষা শুরুর পরে অভিযোগ পাওয়া মাত্র সব কলেজ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, পরীক্ষার্থীদের কাছে মোবাইল পাওয়া গেলে তাঁদের ‘আরএ’ করতে হবে।
তবে বেশ কিছু কলেজের অধ্যক্ষের বক্তব্য, পরীক্ষার্থীদের মোবাইল নিয়ে ঢোকা কিছু কলেজ নিষিদ্ধ করলেও, অনেক কলেজেই তাঁদের এই বিষয়ে বাধা দেওয়া হয় না। নিখিলবঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি এবং আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজের অধ্যক্ষের বক্তব্য, পরীক্ষার্থীদের ব্যাগ-সহ মোবাইল ও অন্যান্য বৈদ্যুতিনসামগ্রী নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ আইন করে বিশ্ববিদ্যালয় নিষিদ্ধ করতে না পারলে এই অরাজকতা চলতে থাকবে। তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘকাল কলেজগুলিতে শূন্য পদে নিয়োগ না হওয়ায় শিক্ষাকর্মীর সংখ্যা তলানিতে ঠেকেছে। প্রতিটি পরীক্ষার্থীর পূর্ণাঙ্গ তল্লাশি সম্ভব নয়।শুধুমাত্র অ্যাডমিট কার্ড ও অন্যান্য পরীক্ষা-সামগ্রী নিয়ে প্রবেশ বাধ্যতামূলক করলেই সমস্যার সমাধান হতে পারে।’’