প্রতীকী ছবি।
বিশেষ কমিটি গঠন করার পরেও থামানো যাচ্ছে না অবৈধ নির্মাণ।
উৎসবের মরসুমে ছুটির সুযোগ নিয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পুরসভার অনুমতি ছাড়াই নির্মীয়মাণ বাড়িতে তৈরি করে ফেলা হয়েছে অতিরিক্ত তল। পুরসভা সূত্রের খবর, তা নিয়ে অভিযোগও জমা পড়েছে। সে সব খতিয়ে দেখে ইতিমধ্যেই কাজ বন্ধের নোটিস দিয়েছে পুরসভা। কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন ফিরহাদ হাকিম সম্প্রতি অবৈধ নির্মাণের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘‘ঘটনাটি সত্যি। আমরা আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’ পুরসভার বিল্ডিং দফতরের এক আধিকারিক সোমবার বলেন, ‘‘পুজোর আগে যে হারে শহরে অবৈধ নির্মাণ হচ্ছিল, পুজোর পরে সেই সংখ্যা তুলনায় খানিকটা কমেছে ঠিকই। তবে অবৈধ নির্মাণ বন্ধ হয়েছে, তা বলা যাবে না। মূল রাস্তায় না হয়ে অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে অলিগলিতে, বস্তি এলাকায়। খবর পেলেই আমরা কাজ বন্ধের নোটিস পাঠাচ্ছি।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, ৫, ৬ এবং ৭ নম্বর বরো এলাকা থেকে এমন অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। ট্যাংরা, তপসিয়া, তিলজলা, কড়েয়া, নারকেলডাঙা, গার্ডেনরিচ, একবালপুর ইত্যাদি এলাকা থেকে বেশি অভিযোগ এসেছে। অতিমারিতে শহরে বেআইনি নির্মাণ ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠায় পুর কমিশনার বিনোদ কুমার গত জুলাই মাসে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছিলেন, প্রতিটি বরোয় এগজিকিউটিভ এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারেরা বেআইনি নির্মাণ ঠেকাতে কড়া নজরদারি চালাবেন। পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন নিজেও মাস তিনেক আগে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করে বেআইনি নির্মাণ ঠেকাতে পুরসভা-পুলিশ মনিটরিং কমিটি গঠন করেছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও বেআইনি নির্মাণ থামানো যাচ্ছে না।
পুরসভা সূত্রের খবর, পোস্তা থানা এলাকার হরিরাম গোয়েন্কা স্ট্রিটের একটি আবাসনের বাসিন্দারা বেশ কিছু িদন আগে পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের ডিজি-র কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছিলেন, তাঁদের আবাসনের পাশে অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে। মহেন্দ্র মোহতা নামে এক অভিযোগকারী বলেন, ‘‘পুরসভাকে বার বার বলেও কোনও কাজ হচ্ছে না। আমাদের আবাসন ঘেঁষে অবৈধ নির্মাণের কাজ হচ্ছে। আবাসনে আলো, বাতাস ঢুকছে না।’’ এ প্রসঙ্গে বিল্ডিং বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলে ইঞ্জিনিয়ার পাঠিয়ে যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনুমতি ছাড়া অতিরিক্ত তল নির্মাণ করা হলে ভেঙে ফেলা হবে।’’
পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের তরফে যদিও জানানো হচ্ছে, এ বার অন্যান্য বছরের তুলনায় বেআইনি নির্মাণের সংখ্যা বেশ কম। ওই বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘বেআইনি বাড়ি কেউ কিনতে না চাওয়ায় প্রোমোটারেরা পিছিয়ে আসছেন। পুলিশ-পুরসভার নজরদারি বাড়ায় এ বার উৎসবের মরসুমে বেআইনি নির্মাণ অন্যান্য বছরের থেকে অনেকটাই কমেছে।’’ পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকেরা
জানাচ্ছেন, প্রতিদিনই কোনও না কোনও বেআইনি বাড়ি ভাঙা হচ্ছে। সম্প্রতি পুরসভার ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় স্যর সৈয়দ আহমেদ রোডের ঠিকানায় একটি বেআইনি বাড়ি ভাঙা হয়েছে।
বিল্ডিং দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শহরে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ পেলেই আমরা কাজ বন্ধের নোটিস পাঠাচ্ছি। তার পরে পুর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’