ঘণ্টায় ৭৫ হাজার টাকা।
এই দরে এখন কলকাতা থেকে ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স। ছোট, দুই ইঞ্জিনের এই সেসনা গ্র্যান্ড ক্যারাভান বিমান রবিবার থেকে ঘাঁটি গেড়েছে কলকাতা বিমানবন্দরে। দিল্লির একটি সংস্থা গত ৪ বছর ধরে মুম্বই এবং ২ বছর ধরে দিল্লিতে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স চালানোর পরে এ বার পা রাখল কলকাতায়।
তাদের দাবি, ছোট এই বিমানে আধুনিক হাসপাতালের আইসিইউ-র মতো সব সুযোগ-সুবিধা থাকছে। গুরুতর অসুস্থ কোনও রোগীকে এক শহর থেকে অন্য শহরে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশ্বের সর্বত্র এই এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহার করা হয়। দিল্লি-মুম্বই এমনকী বেঙ্গালুরুতেও নিয়মিত এই অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়া যায়।
গত সাড়ে তিন বছর ধরে অন্য একটি সংস্থা কলকাতা বিমানবন্দরে ছোট ওই একই ধরনের বিমান রেখে রোগী স্থানান্তরিত করার জন্য ভাড়া দিলেও তা শুধু এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স হিসেবে ব্যবহার হয় না। প্রয়োজনে সেই বিমান অন্য কারণেও ভাড়া দেওয়া হয়। প্রধানত চিকিৎসকের দল এক শহর থেকে অন্য শহরে যেতে তা ব্যবহার করেন। কিন্তু শুধু রোগীদের স্থানান্তরিত করার জন্য নির্দিষ্ট এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স শহরে এই প্রথম।
দিল্লির ওই সংস্থার কর্তা রাহুল মুচ্ছাল জানিয়েছেন, কলকাতার পাঁচ আইসিইউ বিশেষজ্ঞ-চিকিৎসকের সঙ্গে তাঁদের চুক্তি হয়েছে। রোগী স্থানান্তরিত করার জন্য কেউ বিমান ভাড়া নিলে ওই চিকিৎসকদের মধ্যে দু’জন রোগীর সঙ্গে উড়ে যাবেন। সঙ্গে যেতে পারবেন রোগীর দুই আত্মীয়ও। রাহুল জানিয়েছেন, ৭৫ হাজার টাকার মধ্যে চিকিৎসকদের খরচও ধরা আছে।
রাহুল বলেন, ‘‘গত এক বছর ধরে উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে কলকাতায় এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স করে রোগী আনার জন্য অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু, তখন দিল্লি বা মুম্বই থেকে বিমান উত্তর-পূর্ব ভারতে পাঠিয়ে সেখান থেকে রোগীকে কলকাতায় নামিয়ে আবার বিমানটি দিল্লি-মুম্বই ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হলে অনেক খরচ পড়ে যাচ্ছিল। খরচ শুনেই সবাই পিছিয়ে যাচ্ছিলেন। সে কারণেই কলকাতায় একটি বিমান রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। ছোট বিমান বলে ছোট ছোট বিমানবন্দরে অনায়াসে নেমে পড়তে পারবে।’’
রাহুল জানিয়েছেন, মুম্বইতে মাসে গড়ে ১০-১৫ বার, দিল্লিতে গড়ে ৭-৮ বার তাঁদের এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া নেয় লোকে। কলকাতায় প্রথমে মাসে ৫-৬ বার ভাড়া পাওয়ার আশা করছেন তাঁরা। কলকাতায় বর্তমানে যে সংস্থাটি রয়েছে, তারা জানিয়েছে, গত সেপ্টেম্বরে চার বার রোগী স্থানান্তরিত করার জন্য তাঁরা কলকাতা থেকে বিমান ভাড়া দিয়েছেন। উত্তর-পূর্ব ভারত ছাড়াও ভাগলপুর, বোকারো, ঝাড়খণ্ড থেকেও রোগী স্থানান্তরিত করার জন্য যোগাযোগ করা হচ্ছে।