কলকাতার ১০ জায়গায় বিক্ষোভ দেখাল বিজেপি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যেই কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখাল বিজেপি। কোনও অনুমতি ছাড়া বিক্ষোভ হলেও করোনাকালের নিয়ম মেনেই হয় বিক্ষোভ। ফলে পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হয়নি বিজেপি কর্মীদের। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে একই সঙ্গে দক্ষিণ কলকাতার ১০টি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় জাল ভ্যাকসিন কাণ্ডের পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি যুব মোর্চার কর্মীরা।
বৃহস্পতিবারই বিধানসভায় আচমকা বিক্ষোভ দেখিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের ভাষণে বারবার বাধা দেয় বিজেপি। শেষে সংক্ষিপ্ত হয়ে যায় ধনখড়ের ভাষণ। যদিও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি ছিল, সরকারের লিখে দেওয়া ভাষণে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের উল্লেখ ছিল না বলেই তাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। রাজ্যপাল কেন ভাষণ অসম্পূর্ণ রাখেন, সেটা তিনিই বলতে পারবেন। তবে গেরুয়া শিবির মনে করছে, বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণ শুরু হতেই আচমকা বিক্ষোভ দেখিয়ে সাফল্যই পেয়েছে পরিষদীয় দল। দলের নেতারাই এটাকে ‘গেরিলা হামলা’ বলে তুলনা করেছেন।
দক্ষিণ কলকাতার যুব শাখার উদ্যোগেই হয় বিক্ষোভ প্রদর্শন। নিজস্ব চিত্র
শুক্রবার বিধানসভায় যে ভাবে আচমকা বিক্ষোভ হয়েছে সেটাই যেন দেখা গেল শনিবার। আলিপুর চিড়িয়াখানা, জাতীয় গ্রন্থাগার, কালীঘাট মন্দির থেকে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল— মোট ১০টি জায়গায় বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। হাতে ছিল জাল ভ্যাকসিন কাণ্ড নিয়ে পোস্টার। সেই সঙ্গে এই বিষয়ে বাংলার বিদ্বজ্জনরা কেন চুপ, তা নিয়েও পোস্টার দেখা গিয়েছে বিজেপি-র বিক্ষোভে।
মূলত বিজেপি-র দক্ষিণ কলকাতা জেলা যুব মোর্চার পক্ষেই এই বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়। জেলা যুব সভাপতি মুকুন্দ ঝাঁ বলেন, ‘‘পুলিশের অনুমতি নিয়ে এই কর্মসূচি করা সম্ভব ছিল না। এখন রাজ্য সরকারে বিধি অনুযায়ী ৫০ জনের বেশি মানুষের জমায়েত সম্ভব নয়। কিন্তু আমরা খুব কম সংখ্যায় ছিলাম। তাতেও আমরা অনুমতি পেতাম না। সেই কারণেই এই ভাবে আচমকা বিক্ষোভের পরিকল্পনা করা হয়। সংবাদমাধ্যমকেও আগাম জানানো হয়নি।’’
বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল জাল ভ্যাকসিন কাণ্ডের প্রতিবাদে পোস্টার। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যে যে লকডাউন পরিস্থিতি চলছে সেটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বলে প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে বিজেপি। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল যাতে কোথাও বিক্ষোভ দেখাতে না পারে, তার জন্য জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা, গণপরিবহণ চালুতে সরকারের আপত্তি বলে মনে করছে গেরুয়া শিবির। শনিবার কলকাতায় যে ভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়েছে তা আরও হবে বলেই বিজেপি সূত্রে খবর। পুলিশ অনুমতি চাইতে গেলে দেবে না ধরে নিয়েই জেলায় জেলায় এই ভাবে বিভিন্ন ইস্যুতে আগামী দিনে আন্দোলনে নামার পরিকল্পনাও বিজেপি করছে বলে পদ্মশিবির সূত্রে জানা গিয়েছে।