—ফাইল ছবি
চিনা মাঞ্জার দাপট কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না মা উড়ালপুলে। মাঝেমধ্যে কোনও দুর্ঘটনার পরে পুলিশ-প্রশাসন নড়েচড়ে বসলে কিছু দিন হয়তো বন্ধ থাকছে ওই মাঞ্জা দিয়ে ঘুড়ি ওড়ানো। কিন্তু তার পরেই ফের শুরু হয়ে যাচ্ছে ওই সুতোর ব্যবহার। রবিবার বিকেলে মা উড়ালপুলে চিনা মাঞ্জায় জখম হয়েছেন ভবানীপুরের বাসিন্দা রোহিত সাউ নামে এক যুবক।
সোমবার রোহিত জানান, একটি কাজে সল্টলেকে যাবেন বলে রবিবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ ভবানীপুর থেকে মোটরবাইক নিয়ে বেরিয়েছিলেন তিনি। মা উড়ালপুলের মাঝামাঝি জায়গায় এসে হেলমেটের ভিতরে ধারালো কিছুর ঘর্ষণ অনুভব করতেই বাইক থামিয়ে দেন রোহিত। তার পরেই দেখেন, হেলমেটের তলা দিয়ে ঢুকে যাওয়া সুতোয় চিবুকের কিছুটা অংশ কেটে গিয়েছে। রক্ত ঝরছে সেখান থেকে। ওই অবস্থায় কিছুটা ঘাবড়েই যান রোহিত।
তিনি জানান, বাঁ দিক থেকে সুতোটি আসায় তিনি ডান হাত দিয়ে সেটিকে ধরে ফেলেন। এর পরে পকেট থেকে রুমাল বার করে ক্ষতস্থানে কোনও মতে সেটি বাঁধেন। উপায়ান্তর না দেখে ওই অবস্থাতেই মোটরবাইক চালিয়ে বাইপাসের বেলেঘাটা ট্র্যাফিক গার্ডে যান রোহিত। সেখান থেকে পুলিশ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
রোহিতের কথায়, “মাঞ্জা সুতোটা হাত দিয়ে ধরে ফেলায় আমি বেঁচে গিয়েছি। না-হলে গলা কেটে যেত।” পুলিশ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা করান রোহিত। পরে যান একটি বেসরকারি হাসপাতালে। তিনি বলেন, “উড়ালপুলের উপরে চিনা মাঞ্জায় যে এ রকম ঘটতে পারে, তা জানা ছিল না। আগে জানলে মা উড়ালপুলই ধরতাম না।”. চিবুকে ব্যান্ডেজ করাতে হয়েছে রোহিতকে। পরে তপসিয়া থানা তাঁকে ফোন করে ডাকলে রবিবার রাতেই সেখানে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
রবিবারই প্রথম নয়। মা উড়ালপুলে চিনা মাঞ্জায় এর আগেও বেশ কয়েক বার এমন ঘটনা ঘটেছে। জখম হয়েছেন বেশ কয়েক জন মোটরবাইক চালক। ঘটেছে মৃত্যুও। প্রথম দিকে পুলিশ আশপাশের এলাকায় সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা করেছিল। পাশাপাশি, এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে চিনা মাঞ্জা বিক্রেতাদের গ্রেফতারও করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও বন্ধ করা যায়নি চিনা মাঞ্জার বিক্রি বা ব্যবহার। শেষে ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি চালানোর ব্যবস্থা করা হয় পুলিশের তরফে। কিন্তু লাভ হয়নি তাতেও।
সচেতনতার প্রচার, আইনি পদক্ষেপ, নজরদারি— কোনও কিছুতেই যে চিনা মাঞ্জার ব্যবহার কমানো যাচ্ছে, ফের তা প্রমাণ করল রবিবারের ঘটনা।