—প্রতীকী চিত্র।
নিখোঁজ হওয়ার সাত মাস পরে একটি পরিত্যক্ত বাড়ির তেতলা থেকে উদ্ধার হল এক আইনজীবীর দেহ। গত রবিবার ঘটনাটি ঘটেছেচিৎপুর থানা এলাকার শ্রীনাথ মুখার্জি লেনে। পুলিশ জানিয়েছে, দেহটি পুরো কঙ্কালে পরিণত হয়েছে। মৃতের পরনে থাকা প্যান্ট এবং শার্ট দেখে সোমবার দেহ শনাক্ত করেন তাঁর স্ত্রী। মঙ্গলবার তিনি চিৎপুর থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাঁর স্বামীকে ষড়যন্ত্র করে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১১ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ ছিলেন উত্তর কলকাতার নর্দার্ন অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা, শিয়ালদহ আদালতের আইনজীবী পার্থ সাহা (৫২)। ওই দিন তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। আর ফিরে আসেননি। পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়েরি করেছিল পার্থের পরিবার। যদিও পুলিশের তরফে সন্ধান চালানো হলেও ওই আইনজীবীর খোঁজ মেলেনি।
এক পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, রবিবার এক ব্যক্তি চিৎপুর থানায় এসে জানান, শ্রীনাথ মুখার্জি লেনে ওই পরিত্যক্ত বাড়ির তেতলায় পোশাক পরা অবস্থায় এক জনের দেহ পড়ে আছে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সোমবার সেখানেই ওই আইনজীবীর দেহের ময়না তদন্ত হয়। তবে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে ময়না তদন্তকারী চিকিৎসকদের তরফে কিছু জানানো হয়নি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই বাড়িটি গত চার বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সেখানে মাঝেমধ্যেই নেশাগ্রস্তদের আসর বসে। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, যে ব্যক্তি থানায় এসে ঘটনাটি জানিয়েছিলেন, তিনিও রবিবার ওই পরিত্যক্ত বাড়িটিতে নেশা করতে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তিনি ওই দৃশ্য দেখেন।
তবে ওই আইনজীবী কী ভাবে পরিত্যক্ত বাড়িটিতে পৌঁছলেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। লালবাজার জানিয়েছে, মৃতদেহের পাশ থেকে একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। তাতে বেশ কিছু নথিপত্র ছিল। সেগুলি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ব্যাগ থেকে মিলেছে একটি হাতে লেখাকাগজও। যা ওই আইনজীবীরই লেখা বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান পুলিশের। তবে লেখাটি ঝাপসা হয়ে যাওয়ায় তার মর্মোদ্ধার করা যায়নি। এক তদন্তকারী অফিসার বললেন, ‘‘যে বাড়িটি থেকে মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে, সেটির আশপাশে কোনও সিসি ক্যামেরা নেই। মৃতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। ওই আইনজীবীর সঙ্গে কারও কোনও রকম শত্রুতা ছিল কি না, তা-ও খতিয়েদেখা হচ্ছে।’’