যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ, শুক্রবার কর্মসমিতির বৈঠক ডাকা হয়েছে। অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে এই বৈঠকে গত অগস্টে র্যাগিংয়ের জেরে ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনার অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। এত দিন পরে কেন এই রিপোর্ট কর্মসমিতির বৈঠকে পেশ করা হচ্ছে, সেই প্রশ্ন উঠছে।
প্রথম থেকেই এই তদন্ত কমিটি বিতর্কের মুখে পড়েছিল। এই কমিটির তদন্তের এক্তিয়ার নিয়েই প্রশ্ন তোলেন তৎকালীন অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। তার পরেও কমিটি তদন্ত চালায় এবং তার ভিত্তিতে রিপোর্ট তৈরি করে। শেষ পর্যন্ত অ্যান্টি-র্যাগিং স্কোয়াডের বৈঠকে কিছু অংশ বাদ দিয়ে ওই রিপোর্টকেই মান্যতা দেওয়া হয়। এর পরে ওই রিপোর্ট অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটিতে পাঠানো হয়। ডিসেম্বরে অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটির বৈঠকেও এই রিপোর্ট পাশ হয়। রিপোর্টে উল্লিখিত বিভিন্ন সুপারিশ কার্যকর করতে তা কর্মসমিতির বৈঠকে এর পরে পাশ করানোর কথা ছিল। কিন্তু আচমকা রাজ্যপাল বুদ্ধদেবকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দিলে দেখা যায়, এই কমিটির রিপোর্টে তখনও তিনি সই করেননি। ফলে রিপোর্ট চলে যায় ঠান্ডা ঘরে। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে এসেছেন ভাস্কর গুপ্ত। তার পরে কর্মসমিতির বৈঠক হচ্ছে। সেখানে ওই রিপোর্ট পেশ হবে।
নবগঠিত ওই কর্মসমিতিতে এ বার রাজ্যপালের প্রতিনিধি হিসাবে পাঠানো হয়েছে বাগবাজার হরনাথ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কাজী মাসুম আখতার এবং জাতীয় গ্রন্থাগারের অধিকর্তা অজয়প্রতাপ সিংহকে। রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে ফের এসেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির বিভাগীয় প্রধান মনোজিৎ মণ্ডল। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান হয়ে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতিতে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি হওয়া ‘স্বার্থের সংঘাত’ বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে অনেকের মত।
যাদবপুরে কর্মসমিতির বৈঠকের পাশাপাশি, শুক্রবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট বৈঠক হওয়ার কথা। যদিও স্থায়ী উপাচার্য না থাকায় ও ছাত্র-স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় না থাকার কথা জানিয়ে উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে ওই বৈঠক স্থগিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ‘ছাত্র-স্বার্থে’ তাঁরা বৈঠক করবেন। শিক্ষা মহলের একাংশের প্রশ্ন, কলকাতা ও যাদবপুর— দুই বিশ্ববিদ্যালয়েই এখন অন্তর্বর্তী উপাচার্য রয়েছেন। তা হলে কলকাতাকে বারণ করলেও শিক্ষা দফতর যাদবপুরের ক্ষেত্রে কেন চুপ? প্রশ্ন উঠেছে, যে হেতু যাদবপুরের বর্তমান অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে রাজ্য সরকারের পছন্দের তালিকা থেকে রাজ্যপাল বেছে নিয়েছেন, তাই কি সেখানে উচ্চশিক্ষা দফতর কোনও বারণ করছে না?