প্রতীকী ছবি।
বাইশ বছর আগের এক খুনের মামলায় দোষী ব্যক্তির সাজা ঘোষণা হতে চলেছে কাল, সোমবার। যদিও এই দীর্ঘ বছরে ধরা পড়েনি বাকি দুই অভিযুক্ত। ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর। পোস্তা থানা এলাকার বড়বাজারের সোনাপট্টিতে খুন হন স্থানীয় কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় কপূর। ওই খুনে অভিযুক্ত হিসেবে এফআইআরে তিন জনের নাম ছিল। তাঁদের গ্রেফতারও করেছিল পুলিশ। কিন্তু তদন্ত এগোতে দেখা গেল, ঘটনায় ধৃত তিন জনের কোনও ভূমিকাই নেই। ফের তদন্ত করতেই জানা যায়, ওই খুনের সঙ্গে জড়িতেরা এলাকার প্রভাবশালী। গ্রেফতার করা হয় এক অভিযুক্তকে। বাকি দু’জনের খোঁজে চলতে থাকে তল্লাশি। নির্দিষ্ট সময়ে আদালতে ধৃতের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। কিন্তু বাইশ বছরেও পুলিশ অন্য দু’জনের নাগাল পায়নি।
আদালত শনিবার অভিযুক্ত অবধেশ সিংহকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। ব্যাঙ্কশালের বিচার ভবনের ফাস্ট ট্র্যাক ফার্স্ট কোর্টের বিচারক গুরুদাস বিশ্বাস তাকে দোষী সাব্যস্ত করে জেল হেফাজতে নিয়েছেন। এত দিন জামিনে মুক্ত ছিল অবধেশ। লালবাজার সূত্রের খবর, সঞ্জয়ের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধ ছিল অবধেশের। যা শত্রুতায় বদলে যায়। এর পরেই সে ঠিক করে সঞ্জয়কে মেরে ফেলবে। প্রথমে ভাড়াটে খুনি নিয়োগ করতে চাইলেও তা সফল হয়নি। পরে অবধেশ নিজেই দু’জন সঙ্গীকে নিয়ে ওই খুন করে।
খুনের মামলার বিচার শেষ করতে ২২ বছর কেন? পুলিশের দাবি, বিভিন্ন জটিলতায় বিচারপর্ব বার বার বাধা পেয়েছে। কখনও বিচার শেষের মুখে বিচারক বদলি হয়ে গিয়েছেন, কখনও নানা পিটিশন দাখিল করে অবধেশ বিচার প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। নির্দিষ্ট দিনে আদালতে অভিযুক্তের অনুপস্থিতিও দেরির একটি কারণ। মামলার সরকারি দুই কৌঁসুলি নবকুমার ঘোষ এবং অমলেন্দু চক্রবর্তী জানান, অভিযুক্ত প্রভাবশালী। বেশ কয়েক জন সাক্ষী বিরূপ হলেও দুই প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান এই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যাঁদের মধ্যে এক জন মহিলা। যিনি ঘটনার সময়ে সেখানে ছিলেন। এ ছাড়া তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ধর পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ হাজির করছিলেন, যেগুলি অবধেশকে দোষী সাব্যস্ত করতে সাহায্য করেছে। পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় প্রথমে যে তিন জনকে ধরা হয়েছিল, তাঁদের জেরা করতেই বোঝা যায় যে ওঁরা নির্দোষ। এর পরেই উঠে আসে এলাকার রাজনৈতিক বিবাদের প্রসঙ্গ। জানা যায়, অবধেশ দীর্ঘদিন ধরেই সঞ্জয়কে খুনের পরিকল্পনা করছিল। প্রথমে জেল হেফাজতে থাকলেও পরে জামিন পেয়ে যায় সে। এ দিন দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে আদালতের নির্দেশে অবধেশকে গ্রেফতার করা হয়।