কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতাল
ফুসফুসের সমস্যা নিয়ে ভর্তি থাকা প্রৌঢ়কে যে সিলিন্ডার থেকে অক্সিজেন দেওয়া হয়েছিল, তা আদতে ফাঁকা ছিল। এমনই অভিযোগ তুলে পরিবারের দাবি, তার জেরেই মৃত্যু হয়েছে ওই প্রৌঢ়ের। সোমবার খাস কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে উঠল এই অভিযোগ।
বিষয়টি অনভিপ্রেত বলে মন্তব্য করে তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মতো জায়গায় এমন চরম উদাসীনতা কেন? বিষয়টি নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছে ওই প্রৌঢ়ের পরিবার। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ অঞ্জন অধিকারী বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। যে সিলিন্ডারটি নিয়ে অভিযোগ, সেটি আলাদা করে সরিয়ে রাখা হয়েছে।’’
সূত্রের খবর, বনগাঁর বাসিন্দা, শ্বাসের সমস্যা থাকা, ষাটোর্ধ্ব তরুণ সাহাকে রবিবার রাতেকলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে দেখেন, রেসপিরেটরি ফেলিয়োরের সমস্যা রয়েছে ওই ব্যক্তির। এর পরে তাঁকে ওই হাসপাতালের জরুরিবিভাগেরই পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করা হয় বলে হাসপাতালের দাবি। আরও দাবি, ভর্তির সময় থেকেই রোগীর শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ ছিল। এ দিন ওই ওয়ার্ডেই রোগীর মৃত্যুর পরে পরিজনেরা অভিযোগ তোলেন, যে সিলিন্ডার থেকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছিল, সেটি আদতে ফাঁকা ছিল। দীর্ঘক্ষণ অক্সিজেন না পাওয়ার কারণেই ওই রোগীর মৃত্যু ঘটেছে বলে অভিযোগ।
জানা যাচ্ছে, এর পরেই রোগীর পরিজনেরা জরুরি বিভাগে বিক্ষোভ দেখান। কী করে রোগীকে অক্সিজেন দেওয়ার ক্ষেত্রে এমন উদাসীনতা দেখানো হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। খবর পেয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে থাকা পুলিশ ফাঁড়ির কর্মীরা এবং হাসপাতালের আধিকারিকেরা গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। এর পরে ওই প্রৌঢ়ের ছেলে সুদীপ্ত সাহা পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে চিকিৎসায় গাফিলতির লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে তাঁরা মৃতদেহ নিয়ে চলে যান। সুদীপ্ত জানান, তাঁরা বন্ডে সই করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় করার সময়েই প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়।
অন্য দিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, জরুরি বিভাগে পর্যাপ্ত সংখ্যায় অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত থাকে। কর্তব্যরত কর্মীরা সেগুলি পরীক্ষা করে তবে রোগীদের দেন। সেখানে এমন ঘটনা কী ভাবে ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উপাধ্যক্ষ বলেন, ‘‘রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়ে মৃত্যু হয়েছে, না কি সত্যিই সিলিন্ডারে অক্সিজেন ছিল না, সেটাই তদন্ত করে দেখা হবে। সেই কারণে অভিযোগ ওঠার পরেই সিলিন্ডার আলাদা করে অন্যত্র রাখা হয়েছে।’’