প্রতীকী ছবি।
মামলাকারী আদালত কক্ষে হাজির। কিন্তু অন্য পক্ষ আসতে পারছেন না। আবার কখনও এর উল্টোটাও ঘটছে। এমন ক্ষেত্রে করোনা অতিমারির কথা মাথায় রেখে বিচারক রায় না দিয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ঘোষণা করছেন।
দূর-দূরান্ত থেকে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলার শুনানিতে এসে সাধারণ মানুষকে এ ভাবেই ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। কলকাতার খাদ্য ভবনে ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের সদর দফতরে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের তিনটি বেঞ্চ রয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার ক্রেতা সুরক্ষা আদালত থেকে মামলা এসে জমা হয় সেখানে। আবার উপভোক্তারা সরাসরি রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতেও মামলা করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে মামলাকারী সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন।
ক্রেতা সুরক্ষা দফতর সূত্রের খবর, রাজ্য আদালতের তিনটি বেঞ্চের মধ্যে প্রথমটিতে তিন জন বিচারক আছেন। কিন্তু দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বেঞ্চের প্রতিটিতে আগে দু’জন করে থাকলেও গত মাসে এক জন করে অবসর নিয়েছেন। লকডাউনের জন্য গত ২৩ মার্চ থেকে ১০ জুন পর্যন্ত আদালত বন্ধ ছিল। ১১ জুন থেকে সপ্তাহে দু’দিন (মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার) রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের শুনানি শুরু হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, ‘আনলক-১’ পর্বে শুনানি শুরু হলেও অনেক মামলার দুই পক্ষ আদালতে হাজির হওয়া নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিচারকের সংখ্যা কমে যাওয়াতেও উপভোক্তাদের দুর্ভোগ বেড়েছে বলে অভিযোগ।
সম্প্রতি একটি মামলার শেষ শুনানির জন্য হাওড়ার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে গাড়ি ভাড়া করে আদালতে হাজির হয়েছিলেন তারক চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তি। তারকবাবু বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে এই মামলা লড়ছি। করোনা সংক্রমণের ভয়ে মোটা টাকা খরচ করে গাড়ি ভাড়া করে আমি এলেও বিপরীত পক্ষ আসেননি। তাই বিচারক পরবর্তী শুনানির তারিখ দিয়েছেন।’’
এ প্রসঙ্গে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হিরণ্ময় ব্রহ্মচারী বলেন, ‘‘রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের মামলার শুনানিতে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ আসেন। করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে অনেক মামলাকারী বা বিপরীত পক্ষ হাজির হতে পারছেন না। এর জন্য সব আইনজীবীরা একজোট হয়ে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের তিনটি বেঞ্চের বিচারকদের অনুরোধ করেছি, কোনও পক্ষ শুনানিতে হাজির না-থাকলে তাঁরা যেন ‘প্রতিকূল’ রায়দান থেকে বিরত থাকেন। তার বদলে যেন পরবর্তী শুনানির দিন স্থির করা হয়।’’
রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণ পুরো পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে। তাই এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই নিয়মিত শুনানি শুরু হবে।’’ ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে বিচারকের নিয়োগ যাতে দ্রুত হয়, সে বিষয়েও তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।