Illegal Constructions

দেড় মাসে কলকাতায় ‘বেআইনি’ নির্মাণের প্রায় ছ’শো নোটিস

বিল্ডিং বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদের মাধ্যমে অবৈধ নির্মাণ চিহ্নিত করার কাজে যাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে, তার জন্য ‘এসওপি’ তৈরি করেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। তবুও শহরে বেআইনি নির্মাণের বিরাম নেই।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২৪ ০৭:৪২
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

গত ১৭ মার্চ গভীর রাতে গার্ডেনরিচে বেআইনি বহুতল ভেঙে ১৩ জনের মৃত্যুর স্মৃতি এখনও টাটকা। গার্ডেনরিচ-কাণ্ডের পরে বেআইনি নির্মাণ ঠেকাতে কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষের তরফে একাধিক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। বিল্ডিং বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদের মাধ্যমে অবৈধ নির্মাণ চিহ্নিত করার কাজে যাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে, তার জন্য ‘এসওপি’ (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর) তৈরি করেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। তবুও শহরে বেআইনি নির্মাণের বিরাম নেই। কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, গত দেড় মাসে পুর এলাকায় ৫৫৮টিরও বেশি বেআইনি নির্মাণের নোটিস জারি করেছে বিল্ডিং বিভাগ।

Advertisement

প্রসঙ্গত, ১৬ মার্চ লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেছিল নির্বাচন কমিশন। অতীতে ভোটের সময়ে আদর্শ আচরণবিধি চালু থাকার সুযোগে বেআইনি নির্মাণ করার ভূরি ভূরি অভিযোগ উঠেছে। এ বছরেও যা বাদ যায়নি। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি লোকসভা ভোটের সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির অসাধু মানুষ ফের বেআইনি নির্মাণে সক্রিয় হয়েছেন? গার্ডেনরিচ-কাণ্ডের পরে পুর কর্তৃপক্ষ বেআইনি নির্মাণ বন্ধে কঠোর মনোভাব নিলেও আদতে তা ধোপে টিকল কি?

যদিও অভিযোগ উড়িয়ে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘গত দেড় মাসে যে সব বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে নোটিস জারি হয়েছে, সেই সব নির্মাণের বেশির ভাগই পাঁচ-দশ বছর আগের। আসলে গার্ডেনরিচ-কাণ্ডের পরে আমরা বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করছি। বিল্ডিং বিভাগের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারেরা প্রতিটি ওয়ার্ড ঘুরে ঘুরে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে বেআইনি নির্মাণের নোটিস দিচ্ছেন। এ জন্যই সংখ্যাটা পাঁচশো ছাপিয়ে গিয়েছে।’’

Advertisement

কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, গত দেড় মাসে বেআইনি নির্মাণের সর্বাধিক অভিযোগ এসেছে ১০ নম্বর বরো এলাকা থেকে। উল্লেখ্য, ওই সময়ের মধ্যে গার্ডেনরিচে, অর্থাৎ ১৫ নম্বর বরোয় বেআইনি নির্মাণের অভিযোগে ন’টি ঠিকানায় নোটিস দেওয়া হয়েছে। পুরসভার বিল্ডিং দফতর সূত্রের খবর, আদর্শ আচরণবিধি অনুযায়ী যে সব বেআইনি নির্মাণে মানুষ বসবাস করছেন, নির্বাচন চলাকালীন সেই সব নির্মাণ ভাঙতে পারবে না পুরসভা। তবে, নির্মীয়মাণ বেআইনি বাড়ি ভাঙতে কোনও অসুবিধা নেই। কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘গত দেড় মাসে বেআইনি নির্মাণে নোটিস জারির পাশাপাশি আদর্শ আচরণবিধিকে মান্যতা দিয়ে বাড়ি ভাঙা হচ্ছে।’’ তবে, সেই সংখ্যাটা নগণ্য বলেই পুরসভা সূত্রের খবর।

নিয়ম অনুযায়ী, বাড়ি ভাঙার সময়ে নিরাপত্তা প্রদানে কলকাতা পুলিশের থাকার কথা। কিন্তু ভোটের প্রাক্কালে কলকাতা পুলিশ পুর কর্তৃপক্ষকে মৌখিক ভাবে জানিয়ে দিয়েছে, নির্বাচন চলাকালীন বাড়ি ভাঙার কাজে পুরসভাকে সহায়তা করা যাবে না। এই অবস্থায় লোকসভা ভোট না মেটা পর্যন্ত অবৈধ নির্মাণ ভাঙার বিষয়ে পুরসভাকে অপেক্ষা করতেই হচ্ছে।

বিরোধীদের প্রশ্ন, ভোট মিটতে এখনও দু’সপ্তাহ বাকি। এই ফাঁকে ফের বেআইনি নির্মাণের রমরমা তা হলে তো বাড়বে? যদিও মেয়রের দাবি, ‘‘লোকসভা ভোটের মধ্যেও বেআইনি নির্মাণ ঠেকাতে পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে। গার্ডেনরিচের দুর্ঘটনার পরে কোনও ভাবেই বেআইনি নির্মাণ বরদাস্ত করা হচ্ছে না। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারদের শাস্তির নিদান রয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement