প্রতীকী ছবি।
শ্মশান বা কবরস্থানে মৃতদেহ সৎকার করাতে গেলে লাগবে আধার কার্ড! সম্প্রতি কলকাতার শ্মশান এবং কবরস্থানে এমনই এক ‘ফরমান’ নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে, পয়লা জানুয়ারি থেকে সৎকারের জন্য নতুন আবেদনপত্রে মৃতের, তাঁর বাবা, মা অথবা স্বামীর আধার কার্ড থাকলে দিতে বলা হয়েছে। অথচ বিষয়টি সম্পর্কে পুরোপুরি অন্ধকারে খোদ মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং পুর কমিশনার খলিল আহমেদ। তাঁদের না জানিয়ে কে এমন সিদ্ধান্ত নিলেন, তা নিয়ে বিরক্তি চেপে রাখেননি মেয়র। তার পরেই পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের যে অফিসারেরা ওই কাজে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের শো-কজ করা হয়।
বুধবার ফিরহাদ বলেন, ‘‘সৎকারের সঙ্গে আধার কার্ডের কোনও সম্পর্ক নেই। এখানে যে ভাবে দেহ সৎকার করা হত, সে ভাবেই চলবে।’’ যদিও পুর স্বাস্থ্য দফতরের এক অফিসারের দাবি, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশেই আধার কার্ডের বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে।
পুরসভার খবর, দিন কয়েক আগে গোবরা কবরস্থানে ৯০ বছরের এক প্রবীণের শেষকৃত্যের সময়ে কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মী মৃতের আধার কার্ড চান। তা দিতে না পারায় সমস্যায় পড়ে মৃতের পরিবার। বিষয়টি নিয়ে শোরগোলও হয়। ওই কবরস্থানের নোটিস বোর্ডেও লিখে দেওয়া হয়, সৎকার করাতে হলে আধার কার্ড লাগবে। আরও জানা গিয়েছে, পুর স্বাস্থ্য দফতর এ বিষয়ে প্রায় ৫০ হাজার নতুন আবেদনপত্র ছাপিয়েও নিয়েছে।
পরে মেয়রের কানে বিষয়টি তোলা হয়। আরও বলা হয়, শহরের শ্মশানগুলিতে এই নিয়ম চালু হয়েছে। তা শুনেই প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন মেয়র। পুর কমিশনারকে ডেকে বিষয়টি জানতে চান। তিনি জানান, তাঁর গোচরেও বিষয়টি আনা হয়নি। এর পরেই তিন অফিসারকে শো-কজ করতে পুর কমিশনারকে নির্দেশ দেন মেয়র।
কিন্তু কারও অনুমোদন ছাড়াই পুর স্বাস্থ্য দফতরের অফিসারেরা এমন করলেন কেন? স্বাস্থ্য দফতরের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘পুর কর্তাদের অনুমোদন না নিয়ে এটা করা উচিত হয়নি।’’ তবে পুর স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, শুধু কলকাতা পুরসভা নয়, প্রতিটি জেলা এবং অন্য পুরসভার কাছেও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে এই বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে।