প্রতীকী চিত্র।
নেশার আসরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হল এক যুবককে। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মেটিয়াবুরুজ থানার খাসি গলির কাছে। মহম্মদ ফিরোজ নামে বছর চব্বিশের ওই যুবককে সঙ্কটজনক অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমে মহম্মদ জাভেদ ওরফে রাজেশ নামে এক জনকে গ্রেফতার করেছে মেটিয়াবুরুজ থানার পুলিশ। রবিবার ধৃতকে আদালতে তোলা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ১০টা নাগাদ চিৎকার-চেঁচামেচির আওয়াজ শুনতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রথমে বিষয়টিতে গুরুত্ব না দিলেও হঠাৎ কারও গোঙানির আওয়াজ পেয়ে তাঁরা ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। সকলে মিলে এগিয়ে গেলে রাস্তার মোড়ের কাছে একটি বন্ধ দোকানের সামনে এক যুবককে রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাতে দেখতে পান তাঁরা। ওই যুবকের সারা শরীর দিয়ে রক্ত পড়ছিল। স্থানীয়েরাই তাঁকে উদ্ধার করার পাশাপাশি মেটিয়াবুরুজ থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। এর পরে আহত যুবককে প্রথমে গার্ডেনরিচ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই আহত যুবকের দিদি মেটিয়াবুরুজ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তে নেমে রাতেই মহম্মদ জাভেদ ওরফে রাজেশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃত জাভেদের বাড়ি মেটিয়াবুরুজ থানার লিচুবাগান এলাকায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় রিকশাচালক, বছর আটত্রিশের জাভেদ আগে থেকেই চিনত ফিরোজকে। মাঝেমধ্যেই তারা একসঙ্গে নেশা করত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। শনিবার রাতেও তারা একসঙ্গে বসে নেশা করছিল বলেই তদন্তকারীদের অনুমান। আর সেখানেই কোনও বিবাদের জেরে ফিরোজকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে অভিযুক্ত কোপায় বলে মনে করছে পুলিশ। তবে এই ঘটনার পিছনে পুরনো কোনও আক্রোশ থাকতে পারে বলেও মনে করছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃত যুবককে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে হামলার কারণ জানার চেষ্টা করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
রবিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে আসে কলকাতা পুলিশের ফরেন্সিক দল। তারাও ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করে। তবে ঘটনার বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় এক বাসিন্দা শুধু বলেন, ‘‘ওই যুবকের সারা শরীর দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল। এমন ভাবে কোপ মারা হয়েছিল যে, পেট থেকে প্রায় সব কিছু বেরিয়ে এসেছিল। পেটে একাধিক ক্ষতচিহ্ন ছিল।’’ রবিবারও ঘটনাস্থলে ছিল রক্তের দাগ। ঘটনার পর থেকে আতঙ্কের পরিবেশ রয়েছে গোটা এলাকায়। মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।