—প্রতীকী চিত্র।
বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু বাড়ি ফিরল তাঁর নিথর দেহ। বৃহস্পতিবার রাতে শপিং মলের সাততলার পার্কিং লট থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে মহম্মদ আব্দুল রউফ নামে সেই যুবকের। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, বৃহস্পতিবার বিকেল চারটে নাগাদ বন্ধুদের সঙ্গে ওই মলে দেখা করতে যাবেন বলে ব্রড স্ট্রিটের বাড়ি থেকে বেরোন ২২ বছরের যুবক রউফ।
তবে পুলিশ ওই যুবকের বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছে, তাঁদের সঙ্গে দেখা হয়নি রউফের। পাশাপাশি পুলিশ এ-ও জেনেছে, ওই যুবককে তাঁর মা রাত আটটা নাগাদ ফোন করলে তিনি জানান, বন্ধুদের সঙ্গে ওই মলেই আছেন। তখন মা তাঁকে দ্রুত বাড়ি ফিরে আসার জন্য বলেন। রাত ন’টা নাগাদ ফের ফোন করলে রউফ তাঁর মাকে জানান, বন্ধুদের সঙ্গে ‘মা’ উড়ালপুলে আছেন। পরে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি বলে পরিবার পুলিশকে জানিয়েছে।
তদন্তকারী এক অফিসার জানান, ওই যুবক বন্ধুদের সঙ্গে মলে যাওয়ার কথা বললেও তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা জানিয়েছেন, সে দিন তাঁদের সঙ্গে রউফের দেখাই হয়নি। তা হলে কাদের কথা রউফ তাঁর মাকে বলেছিলেন, তা জানতে মৃতের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বিকেল চারটে থেকে রাত দশটা, অর্থাৎ, ঘটনার আগে পর্যন্ত তিনি কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন বা কাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন, তা জানা যাবে ফোনের কল ডিটেলস থেকে।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টা নাগাদ দক্ষিণ কলকাতার ওই মলের সাততলার পার্কিং লট থেকে নীচে পড়ে যান ব্রড স্ট্রিটের বাসিন্দা, আইনের ছাত্র রউফ। তাঁকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। বাড়ির একমাত্র ছেলের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে রউফের পরিবার। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত মৃতের পরিবার কড়েয়া থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি।
কিন্তু কী ভাবে রউফ মলের সাততলার পার্কিং লটে পৌঁছে গেলেন, সেই প্রশ্ন উঠছে। তবে মল কর্তৃপক্ষের তরফে পুলিশকে জানানো হয়েছে, প্রতিটি তল থেকে যে কেউ পার্কিং লটে পৌঁছে যেতে পারেন। ঘটনার আগে রউফকে এক বার ওই সাততলায় ঘোরাঘুরি করতে দেখেছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। গাড়ি নেই, অথচ পার্কিং লটে যুবককে ঘুরতে দেখে এক বার সেখান থেকে নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে সরিয়ে দিয়েছিলেন বলে পুলিশ জেনেছে। জানা গিয়েছে, কর্মীরা যে সার্ভিস লিফ্ট ব্যবহার করেন, সেই লিফ্ট ব্যবহার করেই সাততলায় গিয়েছিলেন রউফ। কী ভাবে নজর এড়িয়ে রউফ পার্কিং লটে পৌঁছে গেলেন, তা স্পষ্ট করতে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে কথা বলছে পুলিশ। এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে ওই যুবক আত্মহত্যা করেছেন। মলের পার্কিং লটের সিসি ক্যামেরায় তাঁকে একাই ঘুরতে দেখা গিয়েছে। ওই সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বাজেয়াপ্ত করা হবে। মোবাইল ফোনের থেকে তথ্য উদ্ধার হলে জানা যাবে, ঘটনার আগে কোথায় ছিলেন বা কার সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল? পাশাপাশি মল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সেখানকার নিরাপত্তা নিয়েও কথা বলা হচ্ছে।