এক যুবককে মহারাষ্ট্রের কারাড থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে এসেছে বিধাননগর (উত্তর) থানার পুলিশ। প্রতীকী ছবি।
অনলাইনে প্রতারণার এক নয়া কৌশলের সন্ধান পেল বিধাননগর পুলিশ। সেই ঘটনায় ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দা এক যুবককে মহারাষ্ট্রের কারাড থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে এসেছে বিধাননগর (উত্তর) থানার পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, ধৃতের নাম শাহেনশাহ শরিফ শেখ। তার বিরুদ্ধে অনলাইনে বিল মেটানোর নামে বিভিন্ন জায়গায় প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, বছর পঁয়ত্রিশের ওই যুবক বিভিন্ন শহরে গিয়ে বিলাসবহুল হোটেলে থেকেছে এবং গাড়ি ভাড়া নিয়ে ঘুরেছে। অথচ, কাউকেই টাকা মেটায়নি। বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় সল্টলেকের একটি হোটেল এবং রাজারহাটের একটি বিলাসবহুল রিসর্টেও একই ঘটনা ঘটিয়েছিল সে। তদন্তকারীদের দাবি, শাহেনশাহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিল মেটানোর সময়ে হোটেলের কর্মী কিংবা গাড়িচালককে মোবাইলে দেখিয়েছে যে, তার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গিয়েছে। অথচ, কেউই টাকা পাননি।
তদন্তকারীরা জানান, গত জানুয়ারিতে সল্টলেকের এক নম্বর সেক্টরের একটি হোটেলে চার দিন ছিল শাহেনশাহ। বিল হয় ৬৫ হাজার টাকা। ওই যুবক অনলাইনে বিল মিটিয়েছে বলে দাবি করে। অথচ, পরে দেখা যায়, হোটেলের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকেনি। কলকাতা থেকে একটি ক্যাবে সে ওড়িশা গিয়েছিল। সেখান থেকে ওই ক্যাবেই রাজারহাটে ফেরে। ক্যাবের ভাড়া হয়েছিল ৪৫ হাজার টাকা। যা শাহেনশাহ অনলাইনে মিটিয়েছে বলে দাবি করে। পরে ক্যাবচালক দেখেন, অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকেনি। একই ঘটনা সে রাজারহাটের ওই বিলাসবহুল রিসর্টেও ঘটায় শাহেনশাহ।
বর্তমানে বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে বিল মেটানো যায়। যিনি বিল মেটাচ্ছেন এবং যাঁকে মেটাচ্ছেন, দু’তরফের কাছেই মোবাইলে বার্তা যায়। এ ক্ষেত্রে কী ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের সন্দেহ, ওই যুবক এমন কোনও অ্যাপ ব্যবহার করেছে, যার মাধ্যমে সে টাকা না মিটিয়েও টাকা দেওয়ার রসিদ তৈরি করতে পেরেছে।
সাইবার বিশেষজ্ঞ তথা আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বড় অঙ্কের লেনদেনের সময়ে গ্রাহককে পরীক্ষা করে নেওয়া বাঞ্ছনীয়। এখন এমন অনেক অ্যাপ রয়েছে, যেগুলি মুহূর্তের মধ্যে জাল তথ্যের পিডিএফ তৈরি করে দেবে।’’ ওই যুবককে আপাতত জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।