নির্যাতিতারা (বাঁ দিকে)। অভিযুক্ত পুলিশকর্মী। —নিজস্ব চিত্র
এক রূপান্তরকামী এবং তাঁর সঙ্গী দুই মহিলার গাড়ি আটকে রাস্তায় শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠল কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ঘটনার সময় ওই আধিকারিক মত্ত অবস্থায় ছিলেন। সোমবার রাতেই বৌবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতারা। কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, ওই আধিকারিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাসপেন্ড করা হয়েছে তাঁকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার সূত্রপাত সোমবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বৌবাজার থানা এলাকায় চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের উপর একটি ক্যাফের সামনে। পশ্চিমবঙ্গ রূপান্তরকামী উন্নয়ন পর্ষদের এক সদস্যা, আরও দুই মহিলা ওই ক্যাফেতে চা খেতে যান। সামনেই তাঁদের গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল।
অভিযোগ, সোমবার রাতে তাঁরা ওই ক্যাফে থেকে বেরিয়ে গাড়িতে ওঠার সময় এক ব্যক্তি তাঁদের গাড়ি আটকান। বৌবাজার থানায় নির্যাতিতাদের করা লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ওই ব্যক্তি নিজেকে পুলিশকর্মী পরিচয় দেন। নির্যাতিতাদের অভিযোগ, কেন তাঁদের গাড়ি আটকানো হল জানতে চাওয়ায়, ওই পুলিশকর্মী পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি অভব্য আচরণ শুরু করেন। এক নির্যাতিতা পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি গাড়ির সামনে অভব্যতা করার পাশাপাশি গাড়ির দরজা খুলে দুই মহিলার হাত ধরে নামানোর চেষ্টা করেন এবং শ্লীলতাহানি করেন।
আরও পড়ুন: মাদক মামলায় রিয়া চক্রবর্তী ৬ অক্টোবর পর্যন্ত ফের জেল হেফাজতে
নির্যাতিতারা গাড়ি থেকে ওই ব্যক্তির ছবিও তোলেন এবং ১০০ ডায়াল করে পুলিশে খবর দেন। অভিযোগকারিণীদের কথায়,‘‘পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ওই ব্যক্তিকে স্যর বলে সম্বোধন করায় আমরা বুঝতে পারি সত্যি ওই ব্যক্তি পুলিশকর্মী।” অভিযোগ, পুলিশকর্মী বলে মত্ত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি করে পুলিশ। যদিও নির্যাতিতারা রাতেই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: চাল-ডাল-আলু-পেঁয়াজ আর অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নয়, সংসদে পাশ বিল
কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, নির্যাতিতারা যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তিনি কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এক ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিক। বৌবাজার থানার উপরেই তাঁর কোয়ার্টার। তদন্তকারীদের দাবি, ওই আধিকারিক একটি গণ্ডগোলে জড়িয়ে পড়েছিলেন তা ঠিক। তবে অভিযোগকারিণীদের সঙ্গে তাঁর বক্তব্যের অনেক ফারাক রয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা দায়ের করেছি। দু’পক্ষের বক্তব্য, অভিযোগকারীদের তোলা ভিডিয়ো এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন যাঁরা, তাঁদের বয়ান খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” তবে ট্রাফিক পুলিশের একাধিক আধিকারিকের দাবি, অভিযুক্ত আধিকারিকের বিরুদ্ধে এর আগেও মত্ত অবস্থায় বিভিন্ন ধরনের গণ্ডগোলে জড়ানোর উদাহরণ আছে। সোমবার রাতের ঘটনার জেরে ওই আধিকারিককে সাসপেন্ড করে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হয়েছে।