Exorciser

গুনিনের অত্যাচারে অসুস্থ স্নায়ুরোগে আক্রান্ত কিশোরী

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীর বাড়ি সুন্দেপুকুর এলাকায়। দিন দশ-বারো আগে হঠাৎ তার আচরণে কিছু অস্বাভাবিকতা লক্ষ করেন বাড়ির লোকজন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২০ ০২:০৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

দিন কয়েক ধরে স্নায়ুরোগজনিত সমস্যায় ভুগছিল দশম শ্রেণির এক ছাত্রী। কিন্তু চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে ওই ছাত্রীর বাবা তাকে নিয়ে যান এলাকার এক গুনিনের বাড়িতে। গুনিনের সেই ডেরায় রোগ নিরাময়ে ঝাড়ফুঁক থেকে তুকতাক, সব চেষ্টাই চলে। তাতেও সমস্যা না মেটায় ওই গুনিনের নিদানে ১৬ বছরের সেই মেয়েটিকে নেড়া করে তার মাথায় জল ঢালা হয়। রোগ সারা তো দূরের কথা, আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছে মেয়েটি।

Advertisement

লজ্জায় ঘর থেকে বাইরে বেরোতেও পারছে না সে। এমনই ঘটনা ঘটেছে দেগঙ্গায়। ঘটনার কথা জানতে পেরে মঙ্গলবার মেয়েটির বাড়িতে যান রাজ্য বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী মঞ্চের প্রতিনিধিরা। তার চিকিৎসার পাশাপাশি ওষুধপত্রেরও ব্যবস্থা করেন তাঁরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীর বাড়ি সুন্দেপুকুর এলাকায়। দিন দশ-বারো আগে হঠাৎ তার আচরণে কিছু অস্বাভাবিকতা লক্ষ করেন বাড়ির লোকজন। পরিবারের ধারণা হয়, ওই কিশোরীর উপরে ‘ভূতের ভর’ হয়েছে। তা থেকে রেহাই পেতেই মেয়েটির বাবা তাকে নিয়ে যান স্থানীয় গুনিনের কাছে। জলপড়া, তেলপড়ার পাশাপাশি ঝাড়ফুঁকও করেন সেই গুনিন। তাতেও কাজ না হওয়ায় তিনি নিদান দেন, মেয়েটির মাথা নেড়া করে জল ঢালতে হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: পুজো-জনতার ‘আচরণ’ই ঠিক করবে সংক্রমণের হার​

আরও পড়ুন: অষ্টমীর অঞ্জলির সময়ে মণ্ডপে সর্বাধিক ক’জন, ভাবছে পুলিশ

সেই মতো দু’দিন আগে তাকে নেড়া করে মাথায় জল ঢালা হয়। এ সব অত্যাচারে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে মেয়েটি। এ দিন বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী মঞ্চের দুই সদস্য ওই ছাত্রীর বাড়িতে গেলে সে তাঁদের বলে, ‘‘আমাকে সুস্থ করে দিন। আমি আবার পড়াশোনা করতে চাই।’’ মেয়েটির বাবা-মা জানান, তাঁদের আর্থিক সঙ্গতি নেই। তাই লোকজনের পরামর্শে গুনিনের বাড়িতে গিয়েছিলেন। নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে মেয়ের চিকিৎসার জন্য সাহায্যও চান তাঁরা।

আরও পড়ুন: ‘সুপার স্প্রেডার’ মণ্ডপগুলির সামনে গোটা শহর অসহায়

এ দিন বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক প্রদীপ সরকার বলেন, ‘‘এই সব এলাকার মানুষ যে এখনও ঝাড়ফুঁক, তুকতাকে বিশ্বাস করেন, সেটা আমাদের কাছে লজ্জার। আমরা মেয়েটিকে সুস্থ করে তোলার পাশাপাশি তার পরিবার ও এলাকার মানুষকে সচেতন করার কাজটাও করছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement