অস্ত্রোপচারে বার করা হয় এই টিউমার। —নিজস্ব চিত্র।
পাকস্থলী চেপে এতটাই সঙ্কুচিত হয়ে গিয়েছিল, যে দু’চামচ সুপ খেলেই পেট ভরা মনে হত। মনে হত এক ঢোক জলও বেশি। একই ভাবে ক্রমে ছোট হয়ে ডান দিকে সরে গিয়েছিল অগ্ন্যাশয় (প্যাংক্রিয়াস)। নীচে নামতে শুরু করেছিল বৃহদন্ত্র আর কিডনি। বাইরে থেকে শুধু দেখা যেত, পেট অসম্ভব রকমের ফুলছে। শক্ত হয়ে যাচ্ছে ফোলা অংশ!
বিয়ের বছর দেড়েকের মধ্যে মেয়ের পেটের ওই অবস্থা দেখে অনেকেই ভেবেছিলেন, তবে কি অন্তঃসত্ত্বা? স্ত্রীরোগ চিকিৎসকদের কাছে যেতেই ভুল ভাঙে বছর সাতাশের তরুণীর পরিবারের। জানা যায়, সন্তান নয়, পেট জুড়ে রয়েছে বিশাল এক টিউমার। শেষে গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টিনাল শল্য চিকিৎসক সঞ্জয় মণ্ডল প্রায় চার ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে বার করেন সেই টিউমার। যার ওজন প্রায় ছয় কিলোগ্রাম। দেখতে অনেকটাই কুমড়োর মতো।
সঞ্জয় জানান, প্রিয়াঙ্কা তালুকদার নামের ওই তরুণীর বাড়ি পূর্ব বর্ধমানে। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে তাঁর বিয়ে হয়। বর্তমানে যাদবপুর এলাকার বাসিন্দা তরুণীর গত মে থেকে হঠাৎ পেট ফুলতে শুরু করে। তরুণী জানান, পেট ফুলছে দেখে তিনি শারীরচর্চার ক্লাসে ভর্তি হন। তাতে বরং পেটের বাঁ দিকের ফোলা অংশ শক্ত হতে শুরু করে। কমতে থাকে ওজন। এর মধ্যেই খাওয়া কমে যায় প্রিয়াঙ্কার। তরুণীর কথায়, ‘‘মাছ, মাংস খেতে পারতাম না। স্ত্রীরোগ চিকিৎসককে দেখাতে ইউএসজি করা হয়। সিটি স্ক্যান করে বোঝা যায় টিউমার রয়েছে।’’
৩ অক্টোবর এক বেসরকারি হাসপাতালে তরুণীর অস্ত্রোপচার হয়। শনিবার তাঁকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। সঞ্জয়ের কথায়, ‘‘বায়োপসি রিপোর্টের অপেক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিপদের সব দিক ভেবেই আগাম পরিকল্পনা করা হয়।’’ তরুণী বলছেন, ‘‘কিছু সমস্যা হচ্ছে ভেবেই চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। ভগবানের মতো তাঁরা আমাকে বাঁচিয়েছেন। আগাগোড়া আমার পরিবারও পাশে থেকেছে।’’