পুর দফতরগুলির মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের ‘রোগ’ দীর্ঘদিনের। ফাইল চিত্র।
পুর দফতরগুলির মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের ‘রোগ’ দীর্ঘদিনের। তা নিয়ে কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছে। তবে এ বার দফতরের সমন্বয় নিয়ে প্রশ্ন তুললেন খোদ কর্তৃপক্ষই। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, দফতরগুলির অন্তর্বর্তী সমন্বয়ের অভাবে অহেতুক সময় নষ্ট হচ্ছে এবং প্রকল্পের গতি ব্যাহত হচ্ছে। কেন একই প্রকল্প নিয়ে আলাদা আলাদা করে দরপত্র ডাকা হচ্ছে, সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে পুর কর্তৃপক্ষের তরফে।
পুর প্রশাসন সূত্রের খবর, কোনও প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয়ের হিসাব পেশ ও দরপত্র ডাকা নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। পর্যালোচনায় দেখা গিয়েছে, একই প্রকল্পে একাধিক দফতর পৃথক দরপত্র ডাকছে। তার কারণ, পুরসভারই এক দফতর জানে না, সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে অন্য দফতরের ভূমিকা কী। ফলে প্রকল্পের বিভিন্ন অংশের কাজের জন্য আলাদা ভাবে ব্যয়ের খসড়া প্রস্তুত করা হচ্ছে এবং দরপত্র আহ্বান করা হচ্ছে। মোদ্দা কথায় সমন্বয়ের অভাব, জানাচ্ছেন এক পদস্থ পুরকর্তা। তাঁর কথায়, ‘‘এর ফলে কাজ শেষ হতে অহেতুক দেরি হচ্ছে। এটা চলতে দেওয়া যায় না।’’
এই কারণে বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট ভাল করে তৈরির উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। যাতে রিপোর্টেই প্রকল্পের সব দিক উল্লেখ করা থাকে। আলাদা আলাদা করে কোনও দফতরকে ব্যয়ের খসড়া প্রস্তুত করতে বা দরপত্র ডাকতে না হয়। একান্ত কোনও প্রকল্পের ক্ষেত্রে রিপোর্টে পুরো বিষয়টা উল্লেখ করা না গেলে তখন আলাদা দরপত্র ডাকা যেতে পারে। তবে সেটাও পুর কমিশনারের অনুমতি সাপেক্ষে।
তবে, পুর কর্তৃপক্ষের মুখে যতই ‘সমন্বয়ের অভাব’-এর কথা শোনা যাক না কেন এবং তা দূরীকরণে যতই নিদান দেওয়া হোক না কেন, বাস্তবে তা কতটা মানা হবে অথবা আদৌ মানা হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ী আধিকারিকদের একাংশই। তাঁদের বক্তব্য, আগেও একাধিক বার সমন্বয়ের অভাবের প্রশ্ন সামনে এসেছে। তার পরেও পরিস্থিতি পাল্টায়নি। এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘এ বার অবশ্য খোদ পুর কর্তৃপক্ষই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। তাই দেখার, কিছু পরিবর্তন আসে কি না।’’