প্রতীকী ছবি।
বাড়িতে ছিলেন মা ও ছেলে। বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ আচমকা ঘরের মধ্যে একটা অস্ফুট শব্দ। ছুটে এসে মা দেখলেন, মেঝেয় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন ছেলে। পড়শিদের ডেকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও লাভ হয়নি। বিশ্বজিৎ দত্ত বিশ্বাস (৪০) নামে ওই যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। পুলিশ মনে করছে, নিজের সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি করে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই পুলিশকর্মী। ঘটনার পরে সন্ধ্যার দিকে বিশ্বজিতের স্ত্রী জয়শ্রী দত্ত বিশ্বাস তাঁর শাশুড়িকে কোয়ার্টার্স থেকে বার করে ঘরে তালা দিয়ে দেন বলে অভিযোগ।
বৃহস্পতিবারের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ব্যারাকপুরের লাটবাগান পুলিশ আবাসনে। ওই আবাসনে বিশ্বজিৎ থাকলেও তাঁর পোস্টিং ছিল কলকাতায়। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা দলের কর্মী ছিলেন তিনি। পারিবারিক অশান্তির জেরেই এমন ঘটে থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশ্বজিতের আত্মীয়েরা। একই মত পুলিশেরও। ওই পুলিশকর্মীর স্ত্রীর সঙ্গে অবশ্য যোগাযোগ করা যায়নি।
আদি বাড়ি নদিয়ার স্বরূপগঞ্জে হলেও বিশ্বজিতেরা দীর্ঘদিন দক্ষিণেশ্বরে থাকতেন। ২০০৫ সালে চাকরি পেয়ে আসেন লাটবাগানের পুলিশ আবাসনে। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগে বিশ্বজিতের সঙ্গে তাঁর প্রথম স্ত্রীর বিচ্ছেদ হয়ে যায়। আগের পক্ষের একটি মেয়ে রয়েছে তাঁর। বছর আটেক আগে ফের বিয়ে করেন তিনি। বছর সাতেকের একটি মেয়েও রয়েছে তাঁদের।
পুলিশ জেনেছে, স্ত্রীর সঙ্গে মাঝেমধ্যেই অশান্তি হত বিশ্বজিতের। তাঁর মামি মাধবী নন্দী বলেন, ‘‘শাশুড়ির সঙ্গে বনিবনা ছিল না বিশ্বজিতের স্ত্রীর। সম্প্রতি ব্যারাকপুরের তালপুকুরে ফ্ল্যাট কিনে সেখানে মাকে রেখেছিল আমার ভাগ্নে। ও হাসিখুশি ছেলে ছিল। এই খবরে আমরা স্তম্ভিত।’’
পড়শিরা জানান, শাশুড়ির সঙ্গে নিয়মিত অশান্তি হত জয়শ্রীর। তার জেরে দীর্ঘদিন মানসিক চাপে ছিলেন বিশ্বজিৎ। বুধ এবং বৃহস্পতিবার দু’দফায় স্ত্রীর সঙ্গে ফের অশান্তি হয় বিশ্বজিতের। দুপুরে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি থেকে চলে যান জয়শ্রী। তার পরেই ওই ঘটনা।
বিশ্বজিতের মামাতো ভাই পুলক নন্দীর অভিযোগ, এ দিন সন্ধ্যায় আবাসনে ফেরেন জয়শ্রী। তার পরেই শাশুড়িকে বার করে কোয়ার্টার্সে তালা দিয়ে দেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই পুলিশকর্মীর দেহের ময়না-তদন্ত হয়েছে। রিপোর্ট এলে পুরো ঘটনা জানা যাবে।