বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত শহরের একাংশ। — নিজস্ব চিত্র।
সোমবার রাতেই পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলে আছড়ে পড়েছে
ঘূর্ণিঝড়। তার প্রভাবে প্রবল ঝড়বৃষ্টি শুরু কলকাতা, হাওড়া ও হুগলিতে। কিছু কিছু
জায়গায় গাছ ভেঙে পড়ে অবরুদ্ধ রাস্তাঘাট। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, সোমবার
দুপুর পর্যন্ত কলকাতা ও পাশের জেলাগুলিতে দুর্যোগ চলবে।
দুর্যোগের মধ্যেই মল্লিকবাজারে গাছ ভেঙে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। আপাতত সেই গাছ কাটার প্রক্রিয়া চলছে। রেমালের দাপটে মা এবং তারাতলা ফ্লাইওভারে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। যদিও সাধারণত রাত দশটার পড়ে দু’চাকার গাড়ি ওই ফ্লাইওভারগুলিতে বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু দুর্যোগের কারণে চার চাকার গাড়িও এই মুহূর্তে বন্ধ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া প্রবল বৃষ্টিতে ইতিমধ্যেই সায়েন্সিটিতে জল জমে গিয়েছে।
রেমাল প্রসঙ্গে বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, “কিছু কিছু জায়গায় ট্রান্সফরমার উড়ে গিয়েছে। পরিস্থতি দ্রুত স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। ঝড় থামলে জানতে পারবো কোথায় কী ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে।”
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, স্থলভাগে ল্যান্ডফলের সময় রেমালের
গতিবেগ ঘণ্টায় ১১০-১২০ কিলোমিটার ছিল। ঝোড়ো হাওয়ায় কলকাতার আলিপুরের কয়েকটি
জায়গায় গাছ ভেঙে পড়ে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। কলকাতা পুরসভার কর্মীরা তা
সরানোর কাজ শুরু করেছেন। শরৎ বোস রোডের একটি জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়েছে।
পুরসভা জানিয়েছে, সোমবার সপ্তাহের প্রথম দিন। সাধারণ মানুষের যাতে কোনও সমস্যা না
হয়, সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম আশ্বস্ত করে বলেন, ‘‘আপাতত কোনও
ক্রাইসিস নেই।’’
আবহবিদেরা আগেই জানিয়েছেন, রেমালের দক্ষিণবঙ্গের নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদে সোমবার সকাল থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে। এ ছাড়া ভারী থেকে অত্যন্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা, কলকাতা এবং হাওড়াতে। দক্ষিণ বঙ্গের বাকি জেলাগুলিতেও ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। রেমালের প্রভাব শুধু দক্ষিণবঙ্গে নয়, উত্তরবঙ্গেও পড়বে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, সোম থেকে বুধবার পর্যন্ত মালদা এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে ভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর এবং জলপাইগুড়িতে জারি করা হয়েছে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির হলুদ সতর্কতা।