কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
বকেয়া সম্পত্তি কর মেটাতে যে বড় অংশের ছাড় দিয়েছিল কলকাতা পুরসভা, এ বার সেই নিয়ম বন্ধ করতে চলেছে তারা। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, আগামী ১ অগস্ট থেকে নতুন নিয়মে বকেয়া সম্পত্তিকর আদায় করা হবে। বর্তমানে যে বড় অংশের ছাড় দিয়ে বকেয়া কর মেটানো যেত, সেই পদ্ধতি উঠে গিয়ে নতুন নিয়মে কর মেটাতে হবে কলকাতা পুর এলাকার বাসিন্দাদের। এই ‘ওয়েভার স্কিম’-এর রূপরেখা তৈরি হয়ে গিয়েছে বলেই কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর। এত দিন বকেয়া কর ছাড়ের ক্ষেত্রে সুদের ওপর ৫০ শতাংশ এবং জরিমানার উপর ৯৯ শতাংশ ছাড় মিলত। পুর আইন অনুসারে ২০১৮ সাল থেকে এই ছাড় দেওয়া শুরু করে কলকাতা পুরসভা। কিন্তু গত এক বছরে হিসাব করে দেখা গিয়েছে, ছয় বছর ছাড় দিয়ে যে পরিমাণ কর আদায়ের আশা করা হয়েছিল, তার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা যায়নি। বরং বহু ক্ষেত্রে বকেয়া কর বাকি রয়ে গিয়েছে। তাই এ বছরের গোড়াতেই সিদ্ধান্ত হয়, নতুন অর্থবর্ষ থেকে সেই ছাড়ের পরিমাণ তুলে দিয়ে নতুন নিয়মে কর আদায় শুরু হবে।
প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছিল, নতুন অর্থবর্ষের প্রথম দিন, অর্থাৎ ১ এপ্রিল থেকেই নতুন ‘ওয়েভার স্কিম’ কার্যকর হয়ে যাবে। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে আদর্শ আচরণবিধি চালু থাকায় নতুন নিয়ম কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু বৈঠকে ঠিক হয়েছে আগামী ১ অগস্ট থেকে নতুন এই পদ্ধতিতে বকেয়া কর নেওয়ার কাজ শুরু হবে। এই নতুন নিয়মে ঠিক হয়েছে, কর যত দিন বকেয়া রয়েছে, সুদ ও জরিমানার ওপর ছাড় তত কম হবে। দুই বছর বা তার কম সময়ে বাকি থাকা বকেয়া মেটালে জরিমানার উপর ৯৯ শতাংশ ও সুদের ওপর ৫০ শতাংশ অবধি ছাড় পাওয়া যাবে। ২-৫ বছরের মধ্যে সম্পত্তিকর বকেয়া থাকলে জরিমানার উপর ৭৫ শতাংশ এবং সুদের ওপর ৪৫ শতাংশ ছাড় পাওয়া যাবে। ৫-১০ বছর কর বকেয়া থাকলে জরিমানার উপর ৫০ শতাংশ এবং সুদের উপর ৪০ শতাংশ ছাড় পাওয়া যাবে। ১০ বছর বা তার বেশি সময় কর বকেয়া থাকলে জরিমানার পরিমাণ ২৫ শতাংশ এবং সুদের পরিমাণে ৩৫ শতাংশ ছাড় পাওয়া যাবে।
তবে জুলাই মাসের মধ্যে যাঁরা বকেয়া কর মেটানোর জন্য কলকাতা পুরসভার কাছে আবেদন করবেন , তাঁদের আগের নিয়ম মেনেই ছাড় দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। কিন্তু এই পদ্ধতি মাত্র দু’মাসের জন্য চালু থাকবে। চলতি জুন এবং জুলাই মাসে আবেদনকারীরা এই সুযোগ পেতে পারবেন বলেই কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর। পুরনো নিয়মে সম্পত্তি করে বকেয়ায় ছাড় থাকা সত্ত্বেও আশানুরূপ ফল না মেলায় বাধ্য হয়ে নতুন নিয়ম চালু করে রাজস্ব বৃদ্ধি করার কৌশল নেওয়া হয়েছে, এমনটাই মত কলকাতা পুরসভার আধিকারিকদের একাংশের।