ফাইল চিত্র
শহরে বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করতে আগে একাধিক বার লালবাজারের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে পুলিশকে কঠোর অবস্থান নিতে বলেছেন কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষ। বেআইনি নির্মাণ ঠেকাতে পুলিশ ও পুরসভাকে নিয়ে ইতিমধ্যে কমিটিও তৈরি হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, এত কিছু পরেও বেআইনি নির্মাণ ও পুকুর ভরাটের অভিযোগ থেমে নেই।
সপ্তাহ দুয়েক আগে ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ-পুরসভার ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পুরসভা সূত্রের খবর, বেআইনি নির্মাণ ও পুকুর ভরাটের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও অনেক সময়েই থানা বিষয়টি লঘু করে দেখে। অপরাধীদের পাশে থেকে তাদের সুবিধা করে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ। যে কারণে বেআইনি নির্মাণ ও পুকুর ভরাট আটকাতে বৃহস্পতিবার কলকাতা পুরভবনে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের সঙ্গে মেয়রের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। জরুরি কারণে সেই বৈঠক বাতিল হয়ে গেলেও পুরসভা সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে শীঘ্রই ফের ওই বৈঠক হবে।
পুরসভা সূত্রের খবর, বেআইনি নির্মাণ ও জলাজমি ভরাট রুখতে গত অক্টোবরে লালবাজারের শীর্ষ কর্তার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন তদানীন্তন পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ। বেআইনি নির্মাণের খবর এলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নিতে পুলিশ ও পুরসভার সমন্বয়ে কমিটি গঠিত হয়েছিল। মাঝে ওই কমিটি কঠোর অবস্থান নিলেও সম্প্রতি তার নিষ্ক্রিয়তাও চোখে পড়ছে। ফলে ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে একাধিক বার এই সংক্রান্ত অভিযোগ শুনতে হয়েছে মেয়রকে। এর পরেই বেআইনি নির্মাণ বন্ধে লোকবল বাড়ানোর কথা বলেন পুর কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি এ বিষয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে মেয়রের মন্তব্যে বিভিন্ন মহলে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে পুরসভার আধিকারিকদের একাংশ, সকলেরই মতে, বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করতে কাউন্সিলরদেরও সজাগ থাকতে হবে।
পুরসভা সূত্রের খবর, কড়েয়া, রাজাবাজার, একবালপুর, গার্ডেনরিচ, ই এম বাইপাস লাগোয়া বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও তিলজলা, তপসিয়া, কসবা ইত্যাদি এলাকায় অবাধে বেআইনি নির্মাণ হয়েই চলেছে। পুর বিল্ডিং বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলেও অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ কঠোর পদক্ষেপ না করায় নির্মাণকারীরা পার পেয়ে যাচ্ছে।’’ কয়েক সপ্তাহ আগে ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে শেখ আব্দুল করিম নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, আহিরীপুকুর রোডে একটি বেআইনি বাড়ি তৈরি নিয়ে মাস ছয়েক আগে অভিযোগ জানানো হলেও কোনও কাজ হয়নি। সেই অভিযোগ পেয়ে মেয়রের নির্দেশে আট নম্বর বরোর এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ও সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করা হয়।
পুরসভার এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘বেআইনি নির্মাণ ও পুকুর ভরাট নিয়ে মেয়র লালবাজারের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বার বার বৈঠক করলেও পুলিশ তেমন পদক্ষেপ করছে না। যার জন্য মেয়র ফের বৈঠকে বসবেন।’’
তবে মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) স্বপন সমাদ্দারের দাবি, ‘‘পুকুর ভরাটের অভিযোগ আগের থেকে কিছুটা কমেছে।’’